প্রশ্নটি উঠেছিল কোরাতে। প্রযুক্তি কিংবা ওয়েবদুনিয়া নিয়ে ওয়াকিবহাল যে কেউ কোরা সম্পর্কে জানেন। প্রশ্ন করে উত্তর পাওয়ার ওয়েবসাইট ‘কোরা’। বিশ্বের ১০টি দেশ ভ্রমণ করেছেন এমন একজন পর্যটক এখানে প্রশ্ন করেছিলেন পর্যটকদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ দেশ কোনটি? এর উত্তরে অন্য আরেকজন পর্যটক যিনি বিশ্বের ১০০টি দেশ ভ্রমণ করেছেন তিনি জানিয়েছেন, নিরাপদে নির্বিঘ্নে ঘোরাঘুরি করা যায় আইসল্যান্ডে। তার এই উত্তরে আপভোট পড়ে কয়েক লাখ। পরে কালচার ট্রিপ এ বিষয়ে আইসল্যান্ডের পক্ষে তাদের যুক্তি তুলে ধরে।
কালচার ট্রিপ একটি তথ্য দিয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে অস্ট্রেলিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানের জরিপ অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ দেশ আইসল্যান্ড। টানা ১১ বছর এই অবস্থান ধরে রেখেছে দেশটি। প্রতিবছর ১৬৩টি দেশের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।
জরিপের জন্য অপরাধের হার, সন্ত্রাসী হামলা, মাদকদ্রব্যের ব্যবহার, অপঘাতে মৃত্যু, আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার, কারগারে কয়েদির সংখ্যা, জনদুর্নীতি, সরকারের দুর্নীতি প্রভৃতি বিষয়ের ডেটা সংগ্রহ করা হয় দেশগুলো থেকে।
আইসল্যান্ডের বিষয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। নর্ডিক এই দেশটির আয়তন ৪০ হাজার বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লাখ। দেশটিতে অপরাধের হার শূন্যের কোঠায় লাখে একটি। এখানে কোনো মিলিটারি নেই। প্রতিবেশী দেশগুলোর বিমানবাহিনী পালাক্রমে দেশটির আকাশ পাহাড়া দেয় বা পর্যবেক্ষণ করে। সংগত কারণে যুদ্ধবিগ্রহের আশঙ্কাও নেই। মজার বিষয়, দেশটিতে পুলিশবাহিনী রয়েছে; তবে তারা ঢাল নেই, তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দারের মতো। তারা কোনো অস্ত্র বহন করে না। তবে টহল গাড়িতে একটি আগ্নেয়াস্ত্র থাকে।
হাঁটি-হাঁটি পা-পা করছে এমন শিশু রাস্তায় গিয়ে খেললেও বাবা-মায়েদের কপালে ভাঁজ পড়ে না। বিশ্বের আর কোনো দেশে এই সংস্কৃতি রয়েছে কি না তা জানা যায়নি। আইসল্যান্ডের কোনো ফোনবুকে প্রথমে দেশপ্রধানের নাম উল্লেখ করা হয় না, বর্ণনাক্রমিকভাবে সাজানো রয়েছে গ্রাহকের নাম। এই হিসেবে রাষ্ট্রপ্রধানের নাম সবার শেষেও বসতে পারে। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত প্রভৃতি শ্রেণীকরণের বালাই নেই দেশটিতে। একই সঙ্গে উন্নত জীবনাচরণ, সমতা ও মানসিক স্থিরতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এসব কারণে দেশটি দুর্নীতিমুক্ত। কালচার ট্রিপের মতে, পর্যটকদের জন্য নিরাপদতম দেশে পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ এটি।
রতন কুমার দাস