প্রকৃতির রূপসী কন্যা বাংলাদেশ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লীলানিকেতন বাংলাদেশ। প্রকৃতি যেন অকৃপণ হাতে সাজিয়ে রেখেছে শ্যামল বাংলাকে। এ প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে চায় পর্যটকের মন। এ দেশের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নিয়ে গরিমা অনেক পুরোনো। এখানকার শিল্প, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যপূর্ণ স্থান বরাবরই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করেছে। এমনই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত একটি নদী নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সৌমেশ্বরী নদী।
দুর্গাপুরের আসল সৌন্দর্য লালন করছে সোমেশ্বরী নদী। এর অপরূপ সৌন্দর্য কাছে টানে সব পর্যটককে। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের গারো পাহাড়ের অভ্যন্তরে সীমসাংগ্রী বা সমসাঙ্গা নামক স্থান থেকে উৎপন্ন হয়ে বাঘমারা বাজারের পাশ দিয়ে দুর্গাপুরে প্রবেশ করেছে নদীটি। মূলত রানিখং পাহাড়ের পাদদেশ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। সীমসাংগ্রী থেকে প্রবাহিত বলে এর নামকরণ করা হয়েছে সোমেশ্বরী। জনশ্রুতি রয়েছে, সোমেশ্বর পাঠক নামে এক প্রভাবশালী শাসক এ অঞ্চলের দখল নেওয়ার পর থেকে নদীটি সোমেশ্বরী নাম লাভ করে।
সোমেশ্বরীর রূপ একেক ঋতুতে একেক রকম। তবে সারা বছর এর পানি টলটলে স্বচ্ছ থাকে। বর্ষা মৌসুমে পানির পরিমাণ বেড়ে যায়। শীতকালে পানির পরিমাণ কিছুটা কমে যায়।
তবে শীতকালেই এখানে বেশি মজা। বিশেষ করে শীত আসি-আসি করছেÑএ সময়টাই নদীটি দেখার সঠিক সময়। এ সময়ে নদীতে হাঁটাহাঁটি করার মজাটা অন্যরকম। প্রিয়জন-সঙ্গে আনন্দের মাত্রা বেড়ে যায়। দেখা যায়, একজন আরেকজনের গায়ে পানি ছিটিয়ে মজা করছে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে এখানে বেড়াতে আসেন।
আরও মজার বিষয়, দুর্গাপুর বাজার থেকে রিকশা বা মোটরসাইকেল নিয়ে সোমেশ্বরী পার হয়ে গারো পাহাড়, গোলাপি পাহাড়, নীল পানির লেক প্রভৃতি ঘুরে আসা যায়। এখান থেকে ভারত বাংলাদেশের সীমান্ত দেখার পাশাপাশি রয়েছে একটি চার্চ ও মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রশিক্ষণের কয়েকটি পিলার।
ঢাকা থেকে দুর্গাপুরের উদ্দেশে রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে কয়েকটি পরিবহনের বাস ছেড়ে যায়। ভাড়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।
সারা দিন ঘোরাঘুরির জন্য রিকশায় চড়তে পারেন। এক দিনে ভাড়া ওঠানামা করবে ৩০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে। ভাড়ায় মোটরসাইকেল পাওয়া যাবে তালুকদার প্লাজা ও অগ্রণী ব্যাংকের সামনে।এবার থাকার বিষয়টি। দুই-চারজন মিলে থাকার সবচেয়ে ভালো জায়গা স্বর্ণা রেস্ট হাউজ। ৪০০ টাকার মতো ভাড়া পড়বে ডাবল বেডের রুম।
জাহাঙ্গীর কবীর
মন্তব্য