নিজস্ব প্রতিবেদক: যেসব বিদেশি দূতাবাস তাদের বাংলাদেশি কর্মচারীদের আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে, তারা এর মাধ্যমে আইন ভঙ্গ করেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। গতকাল বিমানবন্দরে করোনা ভাইরাস নিয়ে এক বৈঠকের পরে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
বাংলাদেশিরা কীভাবে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হলেনÑএটি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি আমি জানি না। তবে আমরা মনে করি এখানে যেসব বিদেশি সংস্থা আছে বা দূতাবাস আছে, তারা তাদের কোড অব কনডাক্ট জানে। আইনমতে, আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক যারা হন তারা কেউ বাংলাদেশি নাগরিক হতে পারেন না। আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষককে অবশ্যই অবাংলাদেশি হতে হবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এখানে বিদেশি দূতাবাসগুলো তাদের বাংলাদেশি কর্মচারীদের আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে এবং আইন ভঙ্গ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক বিদেশি নাগরিক হতে হবে। তারা তাদের নাগরিককে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক বানাক, আমাদের আপত্তি নেই। আমাদের দেশে অভ্যন্তরীণ পর্যবেক্ষক আছে। সেটাও যদি তারা বলে, তাহলে কোনো সমস্যা নেই। যেকোনো দূতাবাস যেকোনো বড় রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর সঙ্গে আলাপ করতে পারে। কিন্তু তারা আমাদের সিস্টেম ভঙ্গ করতে পারে না, তারা আমাদের নিয়ম ভঙ্গ করতে পারে না। আমরা এটাই বলেছি। তাদের দায়বদ্ধতা থাকা উচিত।’
এটি থামানো যায় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি নির্বাচন কমিশন জানে। মিশনগুলোকেও দায়িত্ব নিতে হবে। তারা যেহেতু আইন জানে, তাদের বলে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তাদের যে বাংলাদেশি কর্মচারী আছে, তাদের মধ্যে যাদের তারা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক বানিয়েছে, তাদের কোনো সেন্টারে পাঠানো উচিত হবে না।’
উল্লেখ্য, ১০টি পশ্চিমা দেশের দূতাবাস থেকে নিয়োগ করা ৭৪ জনকে শনিবারের ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভোট পর্যবেক্ষণের অনুমতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাদের মধ্যে ২৮ জন বাংলাদেশি, যারা বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি করেন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক সংস্থা/ক‚টনৈতিক মিশনের বিদেশি কর্মকর্তা/কর্মচারীকে বিদেশি পর্যবেক্ষক এবং স্থানীয়দের স্থানীয় পর্যবেক্ষক হিসেবে গণ্য করা হবে। এ জন্য দেশি ও বিদেশিদের ক্ষেত্রে আলাদা নীতিমালা অনুযায়ী আবেদন করতে হবে। কিন্তু ঢাকা সিটির ভোটের ক্ষেত্রে এবার দেশি কর্মীদের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে আবেদন করেছে দূতাবাসগুলো। নির্বাচন কমিশন সেভাবেই তাদের জন্য পরিচয়পত্র ইস্যু করেছে। বিষয়টি ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক একজন নির্বাচন কমিশনার।
যদিও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেছেন, এ ধরনের নিয়োগে কোনো আইনি বাধা নেই। বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়োগে কমিশনের আইন বা বিধি লঙ্ঘিত হয়নি। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও এমনটি করা হয়েছিল।