পলাতক ব্যবসায়ীকে দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী ও ইমাম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী এবং তার মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে ১৫ ব্যাংকের প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা পাওনা। দীর্ঘদিন এসব পাওনা পরিশোধ না করে মোহাম্মদ আলী ও তার পরিবার দুবাইয়ে অবস্থান করছে। তাদের দুবাইয়ে ব্যবসাও আছে। তাদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতে ১৫টির বেশি মামলা চলমান আছে। গতকাল রোববার এক মামলায় সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে পুলিশের আইজি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

অর্থঋণ আদালত, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, নব্বইয়ের দশকে শীর্ষ আমদানিকারক হিসেবে পরিচিতি মোহাম্মদ আলী। এখন তিনি ব্যাংক খাতের শীর্ষ ঋণখেলাপিদের একজন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যাংকের একাধিক চেক প্রতারণা ও খেলাপি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে চেক

প্রতারণার একাধিক মামলায় জেল ও কয়েক কোটি টাকা আর্থিক জরিমানাও করেন আদালত। কিন্তু আসামি আত্মগোপনে থাকায় গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি তার প্রকৃত অবস্থানও নিশ্চিত করতে পারেনি ব্যাংক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় এটা নিশ্চিত করে যে, মোহাম্মদ আলী ২০১৯ সালে সড়কপথে ভারতে চলে যান। পরে দুবাইয়ে চলে যান। গতকাল সোনালী ব্যাংকের ১৮৪ কোটি টাকা খেলাপি জারি মামলার শুনানি শেষে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনাকে পুলিশের আইজিপি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

জানা যায়, সুনাম ও ব্যাংকের আস্থাকে পুঁজি করে ভোগ্যপণ্যের ব্যবসার পাশাপাশি কৃষি, খাদ্য, মোটর পার্টস ও পোশাকশিল্পের ব্যবসা সম্প্রসারণ করেন মোহাম্মদ আলী। আর এসব প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা নেন। আর এসব ঋণের অপব্যবহারের করে ভিন্ন খাতে বিনিয়োগ ও বিপুল পরিমাণ জমি কেনেন। ঋণের অপব্যবহার, ব্যবসায়িক ব্যর্থতা আর ছন্দপতন হয় ব্যবসায়ে। অল্প সময়ের ব্যবধানে ইমাম গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো একে একে বিভিন্ন ব্যাংকের শীর্ষ ঋণখেলাপি পরিণত হয়। এর মধ্যে মাস্টার ট্রেডিংয়ের কাছে ন্যাশনাল ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখার পাওনা প্রায় ১৮৬ কোটি টাকা। একইভাবে ইমাম ট্রেডার্সকে ঋণ দিয়ে বিপাকে পড়েছে সোনালী ব্যাংক। আনিকা এন্টারপ্রাইজকে ঋণ দিয়েছিল কৃষি ব্যাংক ষোলশহর শাখা, উত্তরা ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা, ব্যাংক এশিয়া, আইএফআইসি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক জুবিলি রোড শাখা, মার্কেন্টাইল ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা, ডাচ্-বাংলা, যমুনা ব্যাংক, ন্যাশনাল হাউজিং জিইসি শাখা, ট্রাস্ট ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) জুবিলি রোড ও অগ্রণী ব্যাংক লালদীঘি শাখা বিপুল পরিমাণে খেলাপি পাওনা রয়েছে।  

ইমাম গ্রুপের ইমাম গার্মেন্ট, মুন ফ্যাশন, ইমাম বাটন, ঢাকার শ্যামপুরে কম্পোজিট টেক্সটাইল ও ইমাম প্যাকেজ অ্যাকসেসরিজ নামীয় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান আছে। আর এ গ্রুপের অধীনে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর জমি রয়েছে। এছাড়া মোহাম্মদ আলী এনসিসি ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক ছিলেন। তবে খেলাপি ঋণের দায়ে ব্যাংক পদ হারান। 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০