গবাদিপশুর রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন অপরিহার্য। সাধারণত তরকা, বাদলা ও খুরারোগে গরু আক্রান্ত হয় বেশি। এক সময় এসব রোগে অনেক পশু মারা যেত। রোববার শেয়ার বিজে প্রকাশিত ‘নীলফামারীতে ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন’ শিরোনামে খবর পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকবে। এতে বলা হয়, ওই এলাকার প্রাণিসম্পদের উন্নয়ন ও সংরক্ষণে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন করেছে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এ কর্মসূচিতে একটি খামারের ২৩ গরুকে খুরারোগের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।
গ্রামে সাধারণত প্রায় সব বাড়িতে পালন করা হয় গরু, ছাগল, ভেড়া বা হাঁস-মুরগি। অনেকে কোরবানির হাট সামনে রেখে পশুপালন করে থাকেন। এজন্য তারা সযতেœ পশু মোটাতাজা করেন। এতে তারা লাভবানও হচ্ছেন। আমিষের চাহিদা পূরণেও তারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবেন বছরব্যাপী। দুধ উৎপাদনেও দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে বলা যেতে পারে। পশু মোটাতাজাকরণে ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহারের অভিযোগ অবশ্য শোনা যায় অনেক সময়।
দেশের কোনো কোনো এলাকায় ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে পশুপালন খামার। এর ফলে ভারত বা অন্য দেশের ওপর নির্ভরতা অনেকাংশে কমে এসেছে। এটা বোঝা যায় সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা কমে আসা থেকেও। বলা হয়ে থাকে, গরু পাচারের সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী গুলি করে অনেক সময়। দেশে বেশি বেশি পশুপালন হলে এ ধরনের ঘটনাও কমে আসবে বলে ধারণা। গরু-ছাগল পালনের পাশাপাশি হাঁস-মুরগি পালন করেও অনেকে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এতে কর্মসংস্থানও হচ্ছে।
গরু মোটাতাজা করে অনেকে ভালো মুনাফা পাচ্ছেন। তবে সঠিক পরিচর্যার অভাবে এ ধরনের বিনিয়োগে ক্ষতির শিকার হন কেউ কেউ। পশুকে দিতে হবে যথাসময়ে টিকা বা ভ্যাকসিন। এজন্য ভ্যাকসিনের সরবরাহ বাড়াতে হবে, যাতে পশু হাসপাতালে সহজেই এটি পাওয়া যায়। অনেক সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা বিনা মূল্যের ভ্যাকসিন সরবরাহে অনিয়ম করেন। এজন্য সংশ্লিষ্টরা মনিটরিং বাড়াতে পারেন, যাতে অনিয়ম কমে আসে। এ খাতের বিকাশে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও ভূমিকা রাখতে পারে। ভ্যাকসিন উৎপাদনে গবেষণার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। পশু লালন-পালনকারীদের টিকাদান বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে কর্মসূচি গ্রহণ করাও দরকার। আমদানি করা ভ্যাকসিন যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিতরণের অনুমতি দিতে হবে। আমাদের দেশে অনেক ওষুধ কোম্পানি আছে। তাদের গবাদিপশুর মানসম্মত ওষুধ, ভ্যাকসিন বানাতে বলা যেতে পারে। তবে চিকিৎসকদের সক্ষমতা বাড়াতে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।