পশু বেচাকেনায় অতিরিক্ত হাসিল আদায় করলে কঠোর ব্যবস্থা: র‌্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক:র‌্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, কোরবানির হাটগুলোয় হাসিল ঘর রয়েছে। অনেকে প্রতারিত হচ্ছেন, অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগ এসেছে। হাটগুলোয় আমাদের মোবাইল টিম কাজ করছে। অতিরিক্ত হাসিল গ্রহণ করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গতকাল সোমবার দুপুরে ঈদুল আজহা উপলক্ষে গাবতলী কোরবানির পশুর হাটে র‌্যাব কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন। কমান্ডার মঈন বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও আমরা কোরবানির হাটকেন্দ্রিক বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। স্বনামধন্য যে হাটগুলো রয়েছে, সেখানে হাট পরিচালনা কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করেছি। কোরবানির হাট ও কোরবানির পশু বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে আমরা বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

তিনি বলেন, কোরবানির পশু বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম উপায়ে রাসায়নিক দ্রব্য খাইয়ে গরু মোটাতাজা করেন, অথবা অস্বাস্থ্যকর গবাদি পশু বিক্রি করেন। এসবের বিরুদ্ধে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ও ভেটেরিনারি ডাক্তারের সমন্বয়ে র?্যাব একটি টিম গঠন করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছে। বিভিন্ন হাটে এই টিম পর্যবেক্ষণে যাচ্ছে।

সকাল থেকে গাবতলী হাটের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা ১৫ ব্যবসায়ীকে সতর্ক করেছিÑযারা এ ধরনের গবাদি পশু এখানে বেচাকেনা করছেন এবং যাদের আনা গবাদি পশু মানসম্মত নয়।

কোরবানির হাটকেন্দ্রিক দালাল অজ্ঞানপার্টি, মলমপার্টি, প্রতারক চক্র ও জালটাকা কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। গত রোববার রাত থেকে হাটকেন্দ্রিক অভিযানে প্রতারণা ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ২০ জনকে আমরা আটক করেছি।

কমান্ডার মঈন বলেন, কোরবানির হাটকেন্দ্রিক প্রচুর টাকার নগদ লেনদেন হয়। যেখানে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী জালটাকা নিয়ে হাটে আসেন, লেনদেনের চেষ্টা করেন। এই হাটে আমরা জালটাকা শনাক্তকরণ মেশিন র?্যাব কন্ট্রোল রুমে রেখেছি। আমরা কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিনে ৫০-এর বেশি কারবারিকে আটক করেছি, যারা জাল টাকার কারবারে জড়িত। ৫০ লক্ষাধিক টাকার জাল নোট জব্দ করা হয়েছে।

সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতাদের উদ্দেশে কমান্ডার মঈন বলেন, আপনারা যারা কোরবানির পশু হাটে ক্রয়-বিক্রয় করবেন, তারা নগদ লেনদেনের ক্ষেত্রে

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিন, প্রয়োজনে লেনদেনের টাকা জাল কি না, তা মেশিনে শনাক্ত করুন। এতে করে আমরা জালটাকা কারবারিদের আইনের আওতায় আনতে পারব।

অনলাইনে অনেকে কোরবানির পশু কেনাবেচায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এই অনলাইনে পশু কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে প্রতারণার শিকার না হন, সেজন্য র?্যাবের সাইবার টিম কাজ করছে। বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে। সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। যারা অনলাইনে পশু বেচাকেনায় প্রতারণা করবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

নারী ক্রেতা ও সাধারণ ক্রেতারা অনেক সময় ভোগান্তি হয়রানি শিকার হন, ইভটিজিংয়ের শিকার হন। কেউ প্রতারিত বা ভোগান্তির শিকার হলে র?্যাব কন্ট্রোল রুমে অভিযোগ করুন, আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

বিভিন্ন সময় কোরবানি-পরবর্তী চামড়ার সঠিক মূল্য পান না প্রান্তিক কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্র সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম নির্ধারণ করেন। আমি তাদের হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, আমাদের গোয়েন্দা শাখার একাধিক টিম কাজ করছে। আমরা বেশ কিছু তথ্য এরই মধ্যে সংগ্রহ করেছি। চামড়া বেচাকেনার সিন্ডিকেট করলে আমরা আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এরই মধ্যে মহাখালী ও সাভারে আমাদের গোয়েন্দা টিম অভিযান পরিচালনা করে দালালচক্রের বেশ কয়েকজন সদস্যকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মঈন বলেন, আমাদের সাইবার মনিটরিং টিম কাজ করছে। এরই মধ্যে আমরা বেশ কিছু অনলাইন পশু কেনাবেচার পেজ শনাক্ত করেছি। যারা কোরবানির পশু বেচাকেনা করেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা সরবরাহ করেননি। ঈদের এখনও দুদিন বাকি আছে। আমরা মনিটরিং করছি। আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

হাট থেকে গরু চুরির অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা গরুর হাট থেকে গরু চুরির অভিযোগ পেয়েছি। যারা এসবের সঙ্গে জড়িত তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য কাজ করছি। গতকাল আমরা এই গাবতলী-সাভার রোডে অভিযান পরিচালনা করে ২১ জনকে আটক করেছি, যাদের বিরুদ্ধে গরু ছিনতাই বা গরু নিয়েও টাকা না দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০