নিজস্ব প্রতিবেদক: সোনালী ব্যাংকের ১০০ কোটি টাকা লুটের ঘটনায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে এলসির বিপরীতে ঋণের ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রিমিয়ার নিট ওয়্যার লিমিটেড ও প্রিমিয়ার ওয়াশিং প্লান্টের মালিক এবং সোনালী ব্যাংকের বরখাস্ত হওয়া শাখা ব্যবস্থাপকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দায়ের করা হয়।
গতকাল বুধবার দুদকের নারায়ণগঞ্জ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটি উপ-সহকারী পরিচারক ওয়াহিদ মঞ্জুর সোহাগ বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, প্রথম মামলায় ৭৮ কোটি ৫৫ লাখ ৯৬ হাজার ৫২১ টাকা ও দ্বিতীয় মামলায় ২১ কোটি ৯৭ লাখ ৬৩ হাজার ৬৫৭ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রথম মামলার আসামিরা হলেনÑমেসার্স প্রিমিয়ার নিট ওয়্যার লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু নাসের তাওয়ার, তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মিসেস শামীমা ইয়াসমিন এবং সোনালী ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ শাখার (নারায়ণগঞ্জ) বরখাস্ত হওয়া ব্যবস্থাপক মো. আব্দুস সামাদ।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যাংকের নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে লিমিট ও মেয়াদ অতিক্রম করা এবং আমদানি করা কাঁচামালের মজুত নিশ্চিত না করেই পিএসসি ঋণ বিতরণ করে। এক্ষেত্রে অফিস নোট অনুমোদন ছাড়াই পিএসসি বিতরণ করে এবং বিল আদায়ের লক্ষ্যে বিদেশি ব্যাংকের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। যেখানে শাখা ব্যবস্থাপকের ক্ষমতা বহির্ভূতভাবে বিটিবি ঋণপত্র খুলে, গ্রাহকের ফোর্স লোন দায় থাকা সত্ত্বেও নতুন নতুন বিটিবি এলসি খুলে এবং পুনরায় ফোর্স লোন সৃষ্টি করা হয়।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি মালামাল তৈরি করে রপ্তানি করার কথা থাকলেও রপ্তানি করেনি। মালামাল তৈরি না করার ফলে বেনিফিশিয়ারি ব্যাংক বিটিবি এলসির মূল্য ফোর্স লোন সৃষ্টির মাধ্যমে পরিশোধ করে নিজেরা অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার মাধ্যমে ৭৮ কোটি ৫৫ লাখ ৯৬ হাজার ৫২১ টাকা আত্মসাৎ করেছেন আসামিরা।
অপর মামলায় মেসার্স প্রিমিয়ার ওয়াশিং প্লান্টের মালিক আবু নাসের আজাদ ও সোনালী ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ শাখার (নারায়ণগঞ্জ) বরখাস্ত হওয়া ব্যবস্থাপক মো. আব্দুস সামাদকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঋণ মঞ্জুরি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে এলসি ইস্যুর আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে ও শাখা ব্যবস্থাপক কর্তৃক টাকা আদায় না করে রপ্তানির ডকুমেন্টস ছাড় করে। জামানত ও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ঋণপত্র শূন্য মার্জিনে শাখা ব্যবস্থাপকের ক্ষমতা বহির্ভূতভাবে আসামিরা ২১ কোটি ৯৭ লাখ ৬৩ হাজার ৬৫৭ টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছে।