শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাজ্যে ব্যবহƒত পাঁচটি গাড়ির মধ্যে একটি গাড়ির দাম নতুন মডেলের চেয়ে বেশি।
কভিড-১৯-এর কারণে গাড়ি সরবরাহব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় দেশটিতে ব্যবহƒত গাড়ির চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে এ ধরনের গাড়ির দাম বেড়ে গেছে। খবর: দ্য গার্ডিয়ান।
মহামারির কারণে গাড়ি উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। সংকটে পড়ে সেমিকন্ডাকটর খাত। গত দুই বছরে চিপ সরবরাহে শূন্যতা দেখা দেয়, তবে সে সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করে সেমিকন্ডাকটর প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশ্ববাজারে সেমিকন্ডাকটরের সংকট শুরু হয় ২০২০ সালে। কভিড ছড়িয়ে পড়ার পর এ সংকট দেখা দেয়। বিক্রি কম হওয়ায় তখন গাড়ি উৎপাদনকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চীনের চিপনির্মাতা বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ক্রয় চুক্তি বাতিল করে। ফলে চিপনির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো অন্য খাতে চিপ রপ্তানি শুরু করে। এখন আবার গাড়ি বিক্রি বেড়ে যাওয়ার পর চিপ সংকটের কারণে যথেষ্ট সংখ্যক গাড়ি তৈরি করতে পারছে না প্রতিষ্ঠানগুলো। এ কারণে চাহিদা ও সরবরাহে ছেদ পড়ে। যুক্তরাজ্যে গত মাসে এ সংকট আরও প্রকট হয়েছে।
অটো ট্রেডারসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বছর একটি ব্যবহƒত গাড়ির দাম প্রায় ২৯ শতাংশ বেড়েছে। গত ছয় মাসে একটি গাড়ির দাম গড়ে চার হাজার ২০০ পাউন্ডের চেয়ে বেশি বেড়েছে। তাছাড়া নতুন গাড়ির জন্য অনেক ক্রেতাকে দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এ কারণে তারা দ্রুত চাহিদা মেটাতে সেকেন্ডহ্যান্ড বাজার থেকে পছন্দের গাড়ি কিনছেন। এসব গাড়ির বেশিরভাগ এক বছরের পুরোনো। এ গাড়ির মধ্যে জনপ্রিয়তায় শীর্ষে রয়েছে স্মার্ট ফোরফোর, টয়োটা আরএভি৪ ও ভোকসওয়াগেন টিগুয়ান।
যুক্তরাজ্যের পুরো ব্যবহƒত গাড়ির বাজারে একেকটি গাড়ির দাম বেড়েছে। অটো ট্রেডারসের মতে, গত বছর ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জনপ্রিয় ১০টি ব্র্যান্ডের গাড়ির দাম বেড়েছে। ব্যবহƒত গাড়ির গড় দাম ২০ হাজার পাউন্ডের বেশি। গত ৯৩ সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে এ দাম বাড়ছে।
অটো ট্রেডারসের কমার্শিয়াল ডিরেক্টর আয়ান প্লামার বলেন, শিগগির ব্যবহƒত গাড়ির দাম কমবে না। ২০২০ ও ২০২১ সালে প্রায় ১৫ লাখ ব্যবহƒত গাড়ি বিক্রি হয়েছে। আমরা আশা করছি, চলতি বছর এ ধরনের প্রায় ১০ লাখ গাড়ি বিক্রি হবে। গাড়ির ক্রেতারা এ সুযোগ নেবেন বলে মনে করছেন তিনি। তাদের আচরণেও পরিবর্তন আসছে। তাই সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতি হলে এবং চাহিদা বাড়লেও নতুন গাড়ির তুলনায় পুরোনো গাড়ির বাজার বেশ চাঙা থাকবে।
শুধু যুক্তরাজ্যের গাড়ির বাজারে ব্যবহƒত গাড়ির দাম বাড়েনি। খ্যাতনামা গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ফোর্ড, ভোকসওয়াগেন ও টয়োটা জানিয়েছে, সেমিকন্ডাকটরের অভাবে তাদের উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে চাহিদা অনুযায়ী গাড়ি সরবরাহ করতে পারছে না প্রতিষ্ঠানগুলো। এছাড়া সরবরাহ সমস্যায়ও ভুগছে তারা। অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও ক্রেতারা নতুন গাড়ি কেনার চেয়ে ব্যবহƒত ও পুরোনো গাড়ি কিনতে তুলনামূলক বেশি অভ্যস্ত। যুক্তরাষ্ট্রে ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যবহƒত গাড়ি ও ট্রাকের দাম বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। দেশটির ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিকসের ভোক্তা মূল্য সূচক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সূচকের ইতিহাসে এক বছরে এটিই সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি। তাই ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছরও দেশটিতে ব্যবহƒত গাড়ির চাহিদা অতীতের মতো তুঙ্গে থাকবে।
