পাঁচ বছরের মধ্যে আসতে হবে পুঁজিবাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ব্যাংকের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন লাগবে ১২৫ কোটি টাকা। আবেদন করতে লাগবে ৫ লাখ টাকা। পাঁচ বছরের মধ্যে আসতে হবে শেয়ার মার্কেটে। বৈদেশিক বাণিজ্য, মাঝারি এবং বৃহৎ শিল্পের উদ্যোক্তরা ঋণ পাবে না এ ব্যাংক থেকে। এছাড়া আগামী অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের জন্য মুদ্রানীতি অনুমোদন করা হয়।

গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে সব পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র আবুল বশর।

আবুল বশর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ ডিজিটাল ব্যাংকের গাইডলাইন অনুমোদন করেছে। ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন হবে ১২৫ কোটি টাকা। এ ব্যাংকের কোনো শাখা থাকবে না। ক্রেডিট স্কোরিং করা হবে আইসিআরআর পদ্ধতিতে। ব্যাংকের জন্য আবেদন করতে ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে আবেদন নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ধাপে ধাপে ক্যাশলেসের দিকে যাচ্ছি। আগামী ২০২৭ সালের মধ্যে ৭৫ শতাংশ লেনদেন ক্যাশলেস করতে চাই। ডিজিটাল ব্যাংক তার একটি অন্যতম উদ্যোগ।

তিনি জানান, ডিজিটাল ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে সচ্ছতা ফিরবে। প্রযুক্তিতে অনিয়ম করা সম্ভব না। তাই ঋণের ক্ষেত্রে অনিয়ম অনেকাংশে কমে আসবে। ভবিষ্যৎ প্রজš§ এর সুবিধা পাবে।

ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদিত গাইডলাইনে বলা হয়েছে, ডিজিটাল ব্যাংকে প্রত্যেক স্পন্সরের সর্বনি¤œ শেয়ারহোল্ডিং হবে ৫০ লাখ টাকা। নির্ধারিত সর্বোচ্চ শেয়ার ধারনের পরিমাণ সরকারের সঙ্গে পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনে শিথিল করা যেতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক লাইসেন্স ইস্যু করার তারিখ থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে ডিজিটাল ব্যাংককে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে মূলধন বাজারে তালিকাভুক্ত হতে হবে। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের পরিমাণ সরবরাহকৃত প্রাথমিক মূলধনের তুলনায় কম হতে পারবে না।

এছাড়া কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ঋণখেলাপি কোনো প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি, ব্যক্তি বা তার পরিবারের কোনো সদস্য শেয়ারহোল্ডার হিসেবে আবেদন করতে পারবেন না। উদ্যোক্তরা ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া পাঁচ বছরের আগে শেয়ার হস্তান্তর করতে পারবে না। তবে ব্যাংক ব্যবসা শুরু করার তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক শেয়ার হস্তান্তরের অনুমোদন দেবে না। প্রচলিত ব্যাংকের মতো সর্বোচ্চ ২০ জন পরিচালক থাকতে পারবেন।

গাইডলাইন অনুসারে, নিবন্ধিত প্রধান কার্যালয়ে ব্যবস্থাপনা ও কর্মীদের অফিস থাকবে। এটি ফিজিক্যাল ও ডিজিটাল দুভাবেই গ্রাহকের অভিযোগ গ্রহণ এবং সমাধানের জন্য কেন্দ্রীয় হাব হিসেবে কাজ করবে। তবে ডিজিটাল ব্যাংকের কোনো ফিজিক্যাল শাখা/উপশাখা বা উইন্ডো অনুমোদন পাবে না।

গ্রাহককে জানিয়ে বা না জানিয়ে দৈনিক লেনদেন সামলানোর জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত একটি প্রযুক্তিভিত্তিক বিরোধ নিষ্পত্তি মেকানিজম থাকবে।

ডিজিটাল ব্যাংকগুলো কোনো ওভার-দ্য-কাউন্টার (ওটিসি) সেবা দেবে না। এদের নিজস্ব কোনো শাখা বা উপশাখা, এটিএম/সিডিএম/সিআরএমও থাকবে না।

গ্রাহকদের লেনদেনের সুবিধার্থে ডিজিটাল ব্যাংক ভার্চুয়াল কার্ড, কিউআর কোড ও অন্য কোনো উন্নত প্রযুক্তিভিত্তিক পণ্য দিতে পারে। কিন্তু লেনদেনের জন্য কোনো ফিজিক্যাল উপকরণ দেয়ার অনুমতি নেই এ ব্যাংকের।

বৈদেশিক বাণিজ্য, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পের উদ্যোক্তরা ঋণ পাবেন না বলে গাইড লাইনে উল্লেখ করা হয়। গ্রাহকের ঋণ ঝুঁকির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সময়ে সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক বিকল্প ঋণ স্কোরিং গাইডলাইন অনুসরণ করবে। অস্থাবর সম্পত্তির জামানত হিসেবে নেয়া যাবে।

ডিজিটাল ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) ব্যাংকিং পেশায় কমপক্ষে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাÑযার মধ্যে প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং, রেগুলেশন, গাইডলাইন, সার্কুলার প্রভৃতি ক্ষেত্রে কমপক্ষে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

ডিজিটাল ব্যাংকের সিইওর নিয়োগÑএ বিষয়ে নানা সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা বিভিন্ন রেগুলেশন ও নির্দেশনা অনুযায়ী হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০