নিজস্ব প্রতিবেদক : কৃষি কাজে শ্রমিকের ঘাটতি দেখা দিয়েছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, এ সংকট উত্তরণে পাঁচ বছরে কৃষকদের মাঝে ৫১ হাজারের বেশি আধুনিক যন্ত্রপাতি দেয়া হবে। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী এ কথা জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কৃষিতে শ্রমিকের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে ধানের চারা রোপণ এবং ধান কাটার সময় কৃষি শ্রমিকের সংকট চরম আকার ধারণ করে। এ সংকট উত্তরণে সরকার সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ শীর্ষক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে হাওর ও উপকূলীয় এলাকায় ৭০ শতাংশ এবং অন্যান্য এলাকায় ৫০ শতাংশ উন্নয়ন সহায়তার মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ বছরে ৫১ হাজার ৩০০টি ‘উন্নত কৃষি যন্ত্রপাতি’ বিতরণ করা হবে বলে সংসদে তথ্য দেন মন্ত্রী।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরকার কৃষকের কাছে কম দামে সার পৌঁছে দিতে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭ হাজার ৪২০ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। তবে কৃষি কাজে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় কীটনাশক নামমাত্র মূল্যে সরবরাহের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন সর্বশেষ ২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনের বাঘ, হরিণ, বানর ও কুমিরের সংখ্যা জানান। তিনি বলেন, ওই জরিপ অনুযায়ী বাঘের সংখ্য ১১৪টি। ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতিতে গণনা করে ২০১৫ সালে সুন্দরবনে ১০৬টি বাঘ পাওয়া গিয়েছিল। এছাড়া সুন্দরবনে এক লাখ থেকে দেড় লাখ হরিণ, ১৬৫ থেকে ২০০টি কুমির এবং ৪০ থেকে ৫০ হাজার বানর রয়েছে বলে সংসদকে তিনি জানান।
ঢাকা-২০ আসনের সাংসদ বেনজীর আহমেদের প্রশ্নের জবাবে বনমন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশে বনের পরিমাণ মোট ভূমির ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ, বৃক্ষাচ্ছাদনের পরিমাণ মোট আয়তনের ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
সরকারি দলের আ কা ম সরওয়ার জাহানের প্রশ্নের জবাবে শাহাব উদ্দিন জানান, সামাজিক বনায়নে আওতায় ১৯৮০-৮১ অর্থবছর থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত এক লাখ দুই হাজার ৩৩৯ দশমিক ২৮ হেক্টর উডলট ও ব্লক বাগান সৃষ্টি করা হয়েছে। এছাড়া ৭৬ হাজার ৭৫২ দশমিক ৩৬৬ কিলোমিটার স্ট্রিপ বাগান সৃষ্টি করা হয়েছে। এতে করে সাত লাখ ২৬ হাজার ৬৫৪ জন উপকারভোগীকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।
সরকারি দলের হাবিবর রহমানের প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানান, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের মোট পরিসম্পদের পরিমাণ ৩৯১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে স্থায়ী সম্পদ এক কোটি ৬১ লাখ, বিনিয়োগ (এফডিআর) ২৩৪ কোটি ৭৫ লাখ এবং চলতি সম্পদ ১৫৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
সাংসদ মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জানান, ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত বিভিন্ন সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি সংস্থা এবং সাধারণ মিলে ভূমি উন্নয়ক কর বাবদ ছয় হাজার ৯৬৩ কোটি ১২ লাখ ৯২ হাজার ৮২৩ টাকা আদায় হয়েছে।
সরকারি দলের হাজী মো. সেলিমের প্রশ্নের জবাবে সংসদ কাজে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে সেনাকল্যাণ সংস্থার নিট লাভের পরিমাণ ৯৩ কোটি টাকা। এ সময়ে সংস্থা মোট লাভ করে ৩৭২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। ব্যয় হয় ২৫৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আয়কর দিয়েছে ২০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।