ক্রীড়া প্রতিবেদক: জাতীয় লিগের ম্যাচ চলাকালীন মাঠেই সতীর্থ আরাফাত সানি জুনিয়রের গায়ে হাত তোলেন শাহাদাত হোসেন রাজীব। এজন্য এ পেসার বহিষ্কার হয়েছিলেন ওই ম্যাচের পরবর্তী দুদিন। তবে এটুকুতেই পার পাননি তিনি। এ অপরাধে এ পেসার সব ধরনের ক্রিকেট থেকে পাঁচ বছর নিষিদ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে দুবছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে আছে এক লাখ টাকা জরিমানা। গতকাল বিসিবির টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির প্রধান মিনহাজুল আবেদীন নান্নু এমনটাই জানিয়েছেন।
টেকনিক্যাল কমিটির শাস্তির বিরুদ্ধে অবশ্য আপিল করার সুযোগ পাচ্ছেন শাহাদাত। ২৬ নভেম্বরের মধ্যে আপিল করতে পারবেন তিনি।
এর আগে গত রোববার খুলনায় জাতীয় লিগের শেষ রাউন্ডের ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে সতীর্থ অফ স্পিনার আরাফাত সানি জুনিয়রকে মারধর করেছিলেন শাহাদাত। পরে প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে জানা যায়, বল ঘষে উজ্জ্বল করা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আরাফাতের ওপর ক্ষিপ্ত হন তিনি। এরপর তাদের মধ্যে শুরু হয় কথা কাটাকাটি। এক পর্যায়ে সতীর্থ ওই ক্রিকেটারকে চড়থাপ্পড় মারা শুরু করেন শাহাদাত। আম্পায়ার এসে সরিয়ে দেওয়ার পরও আবার গিয়ে মারতে থাকেন। পরে সতীর্থরা তাকে একরকম জোর করেই নিয়ে যান মাঠের বাইরে। এ ঘটনার পরপরই ম্যাচ রেফারি আখতার আহমেদ শাহাদাতের শাস্তির জন্য ম্যাচ শেষের অপেক্ষা করেননি। আচরণবিধির লেভেল-৪ ভাঙায় এ পেসারকে ম্যাচের শেষ দুদিনের জন্য বহিষ্কার করেন।
খেলা চলাকালীন সতীর্থ বা অন্য কারও গায়ে হাত তোলা আচরণবিধির লেভেল-৪ ভঙ্গ করার অপরাধ। এ ধারা ভঙ্গ করলে সর্বনি¤œ এক বছর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত নিষিদ্ধ করার বিধান রয়েছে।
শাহাদাতের শাস্তির ব্যাপারে গতকাল টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান মিনহাজুল বলেন, ‘ওর ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, এর মধ্যে দুবছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। যদি এর বিরুদ্ধে তার আপিল করার থাকে, তাহলে সে ২৬ তারিখের মধ্যে করতে পারবে। রিপোর্টে এসেছে, সে লেভেল-৪ অপরাধ করেছে। তারপর টেকনিক্যাল কমিটি সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
এর আগে বেশ কয়েকবারই নেতিবাচক খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন শাহাদাত। শুধু তা-ই নয়, ফৌজদারি মামলায় জেলেও গিয়েছিলেন তিনি। এক শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে ২০১৫ সালে মামলা হয় জাতীয় দলের এই বোলারের বিপক্ষে। ওই মামলায় প্রায় দুই মাস জেলে থাকতে হয়েছিল তাকে। সেবার এই পেসারকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করেছিল বিসিবি। পরে তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং জীবিকার কথা ভেবে আবার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ক্রিকেটে ফেরার। কিন্তু ফের ভুল করে বসলেন রাজীব।
ক্রিকেটাররা যেন একই ভুল বারবার না করেনÑএজন্য কঠিন শাস্তির মাধ্যমে উদাহরণ সৃষ্টির চেষ্টা করছে টেকনিক্যাল কমিটি। এমনটাই জানিয়েছেন মিনহাজুল আবেদীন, ‘একজন ক্রিকেটারের এ ধরনের সমস্যা বারবার হওয়া খুবই খারাপ। যে কোনো ক্রিকেটারের জন্যই এটি খারাপ বিষয়। আর বিসিবি এ ব্যাপারে খুবই কঠোর। এতে কোনো খেলোয়াড়েরই পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আর ওর (শাহাদাত) ক্ষেত্রে আমরা সব দিক চিন্তা করেই শাস্তি দিয়েছি। এটা সব ক্রিকেটারের জন্যই উদাহরণ হিসেবে থাকবে।’