পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির মহাসমাবেশ সামনে রেখে গত এক দিনে ঢাকায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, যত বাধা দেবেন, যত গ্রেপ্তার করবেন, তত নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হবে। তারা আরও বেশি দলে দলে সমাবেশ সাফল্যমণ্ডিত করার চেষ্টা করবেন। গত ২৪ ঘণ্টায় আমাদের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমি গ্রেপ্তারকৃত সব নেতার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।’

রিজভী বলেন, ‘শুক্রবার দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই তাদের মহাসমাবেশ হবে। সে জন্য অনুমতি চেয়ে চিঠি দেয়াসহ ‘সকল প্রক্রিয়া’ সম্পন্ন করা হয়েছে। আর আমাদের মহাসমাবেশের প্রস্তুতি চলছে। এই যে মহানগর ঢাকা উত্তর-দক্ষিণের দুই আহ্বায়ক (ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম) এখানে আছেন। তাদের মূল দায়িত্ব এই সমাবেশ অনুষ্ঠানে। তারা মহাসমাবেশকে সাফল্যমণ্ডিত করতে যে কাজ করা দরকার সেটা তারা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন।’

বিএনপির এই মহাসমাবেশ হওয়ার কথা ছিল বৃহস্পতিবার। সে জন্য নয়াপল্টন অথবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চেয়েছিল দলটি। এর পাল্টায় আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ বৃহস্পতিবার বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটেই শান্তি সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল।

বৃহস্পতিবার কার্যদিবস হওয়ায় ঢাকা মহানগর পুলিশ কোনো দলকেই অনুমতি দিচ্ছিল না। বিএনপিকে সমাবেশের জন্য গোলাপবাগ মাঠ ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছিল পুলিশের তরফ থেকে।

এ পরিস্থিতিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কর্মসূচি এক দিন পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়। বুধবার রাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘোষণা দেন, বৃহস্পতিবার নয়, তারা মহাসমাবেশ করবেন শুক্রবার বেলা ২টায়। আর সেটা নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই হবে।

তখন যুবলীগও জানায়, তাদের তিন সংগঠনের শান্তি সমাবেশ একদিন পিছিয়ে শুক্রবার বিকাল ৩টায় নেয়া হয়েছে। শেরেবাংলা নগরে পুরোনো বাণিজ্যমেলা মাঠে সেই কর্মসূচি হবে। তবে বৃহস্পতিবার আবারও সেই সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনে যুবলীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান নিখিল বলেন, শুক্রবার বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ করার জন্য অনুমতি চেয়েছেন তারা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, কাউকেই এখনও ঢাকায় সমাবেশ করতে অনুমতি দেয়া হয়নি। অনুমতি দেয়া হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেবে ঢাকা মহানগর পুলিশ। আর অনুমতি দেয়া হলে দুই দলের ক্ষেত্রেই একই শর্ত প্রযোজ্য হবে।

রাজনৈতিক কোনো দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে বাধা নেই মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, সমাবেশ থেকে সহিংসতা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।

রিজভী বলেন, ‘বিএনপি একটা বড় দল। আমাদের নেতাকর্মীরা দলের যে কোনো আহ্বান, কর্মসূচিকে সফল করার জন্য তারা প্রস্তুত থাকে। এটা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ। সবাই এখানে যোগদান করবেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে। আমাদের জাতীয় নেতাদের বক্তব্য শুনবেন এবং বক্তব্য শুনে আবার ফিরে যাবেন নিজ নিজ এলাকায়।’

ডিএমপি অনুমতির বিষয়ে কী বলেছেÑজানতে চাইলে রিজভী বলেন, ‘আমরা মহাসমাবেশে বিষয়টি তাদের জানিয়েছি এবং তারাƒ । আমাদের কাজ আমরা করেছি। ইনশাআল্লাহ আগামীকাল (আজ) সমাবেশ হবে।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, রফিকুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০