নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ও কারফিউয়ের জেরে পাঁচটি সমস্যার উদ্ভব হওয়ার কথা সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও উপদেষ্টার সামনে তুলে ধরেছেন ব্যবসায়ীরা।
দেশের প্রধান শিল্প খাতগুলোর ব্যবসায়ীরা গতকাল রোববার ঢাকার বিনিয়োগ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের দপ্তরে এক বৈঠকে নিজেদের সমস্যাগুলো তুলে ধরেন।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক উপস্থিত ছিলেন ওই বৈঠকে।
ব্যবসায়ীদের পক্ষে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমসহ বোর্ড সদস্য, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরীসহ অন্তত ৫০ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় ২ ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে সালমান এফ রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে ব্যবসায়ীরা বেশ খোলামেলা আলাপ করেছেন। তাদের পক্ষ থেকে অন্তত পাঁচটি সমস্যার কথা উঠে এসেছে। আমরা এসব সমস্যার সমাধানে পৃথকভাবে আবার বসব।’ তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা আজকে দিনের শেষে প্রতিটা খাতের ক্ষতির চিত্র লিখিতভাবে জানাবেন। পরে সেটা নিয়ে আগামীকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে কথা হবে।’
উপদেষ্টা বলেন, ব্যবসায়ীরা যে পাঁচ সমস্যার কথা বলেছেন, তার একটি চট্টগ্রাম বন্দরকে কেন্দ্র করে।
‘ব্যবসায়ীরা বন্দরে কনটেইনার জট, ডেমারেজের কথা বলেছেন। আন্তর্জাতিক শিপিং লাইনসগুলোর সমস্যার কথা বলেছেন। ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট, শিপিং এজেন্ট, এনবিআর ও শিপিং মিনিস্ট্রিকে নিয়ে বসে আমরা এ সমস্যা নিয়ে আরেকটি মিটিং করব।’ ব্যাংকঋণ অনেক বেশি, ঋণ পাওয়া যাচ্ছে না। পুনঃতফসিল ও সুদ মওকুফের কথা বলেছেন। গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বেশি ও নিয়মিত গ্যাস না পাওয়ার কথা ব্যবসায়ীরা বলেছেন। ইন্টারনেটের বিকল্প একটা সিস্টেম চালু করা যায় কিনা। জেনারেল সিস্টেম বিকল হয়ে গেলে বিকল্প কোনো উপায় আছে কিনা। নিজস্ব একটা স্ট্যান্ডবাই সিস্টেম চালু করা যায় কিনাÑসেই পরামর্শ এসেছে।’
সালমান বলেন, এনবিআরকেন্দ্রিক সমস্যার কথাও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা বলেছেন। ‘এনবিআরকে নিয়ে সেকেন্ড আরেকটা মিটিং করতে চাই। তৃতীয় মিটিং করতে চাই, বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে। ব্যাংককেন্দ্রিক যেসব সমস্যার কথা (ব্যবসায়ীরা) বলেছেন, সেটা সমাধান করতে চাই।’
‘ব্রডব্যান্ড ও আইসিটি বা ইন্টারনেট নিয়ে ব্যবসায়ীরা কথা বলেছেন। আইসিটি নিয়েও বসতে হবে। ইন্টারনেট ছাড়া এখন ব্যবসা সম্ভব নয়। ছোট ছোট নারী উদ্যোক্তারা ইন্টারনেটের ওপর ডিপেন্ডেন্ট আছে। ইকমার্স খাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাদা মিটিং করব। গ্যাস-বিদ্যুতের সমস্যা নিয়েও আমরা আলাদাভাবে বসব। চেষ্টা করব যতটুকু সমাধান করতে পারি।’
বৈঠকে চলমান পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা আবারও সরকারের সঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে জানান সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, ‘অনেকগুলো ভালো ভালো সাজেশন পেয়েছি। সব ব্যবসায়ী জানিয়েছেন তাদের সমর্থনের কথা। যদিও আমাদের এ সমস্যা হয়েছে, এটা খুবই দুঃখজনক একটা ঘটনা আমাদের দেশে ঘটেছে।’ কিন্তু আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এটা ওভারকাম করতে পারব। তারা (ব্যবসায়ীরা) আমাদের সঙ্গে আছেন, সব রকমের সহযোগিতা ব্যবসায়ীরা আমাদের দেবেন।’