নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় প্লাজমা সেন্টার চালু হয়েছে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে গতকাল হাসপাতালের এ প্লাজমা সেন্টারের উদ্বোধন করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক এম এ খান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী এবং গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালের প্রধান বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীল উপস্থিত ছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘কভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস বিভিন্ন রকম উপসর্গ সৃষ্টি করে। রোগ ভালো হলেও কাউকে খুব দুর্বল করে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে প্লাজমা প্রদানের বিষয়টি আরও অনেক প্রচার হওয়া দরকার। সারা বাংলাদেশে প্রতিটি জেলায় প্লাজমা সেন্টার হওয়া দরকার।’
গণস্বাস্থ্যের প্লাজমা সেন্টারে প্রতিদিন ২৫ জন করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত রোগীর রক্ত থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করা হবে বলে জানান তিনি। যারা প্লাজমা নেবেন, তাদের সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা খরচ হবে। গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের প্লাজমা সেন্টার ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। হেমাটো অনকোলজিস্ট এম এ খান জানান, প্লাজমা এখন দুই পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা হচ্ছে।
প্রথম পদ্ধতি প্লাজমাফেরিসস, যা করা হয় একটা মেশিনের সাহায্যে। ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা খরচে মেশিন কিনতে হয়। নমুনা সংগ্রহ করতে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা লাগে। আরেকটা পদ্ধতি হলো, করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠা রোগীর রক্ত থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করা। এখানে সমস্যা হলো, একজন থেকে যে প্লাজমা সংগ্রহ করা হবে, তা একজনকে শুধু একবার দেওয়া যাবে।
এম এ খান বলেন, ‘মধ্যবিত্ত বা নি¤œবিত্ত দেশগুলোর জন্য দ্বিতীয় পদ্ধতি সাজেস্ট করছেন বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা।’ তিনি বলেন, ‘প্লাজমা থেরাপি কোন সময়ে কাকে দিতে হবে, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আগে থেকে প্ল্যান করে বয়স্ক রোগী যারা রয়েছেন, তাদের যদি আমরা কভিড আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দিতে পারি, এটা হলো উত্তম। কারণ সুনির্দিষ্ট ভ্যাক্সিন আসার আগ পর্যন্ত এটা খুব কার্যকরী চিকিৎসা পদ্ধতি। কারণ আমরা জানি, অ্যান্টিভাইরাস যেগুলো ব্যবহার হচ্ছে, এবং ইনজেকশন ফর্মে যেসব ওষুধ ব্যবহার হচ্ছে, এগুলো কমপক্ষে ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকার প্রয়োজন হয়। এখন প্লাজমা থেরাপিই হতে পারে সমাধান।’
জাতীয় শোক দিবসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে। কিন্তু তার আদর্শ রূপায়িত হয়নি। যতদিন বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ না হবে, ততদিন বঙ্গবন্ধুকে সত্যিকারভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করা যাবে না।’