নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ দুবছরের বেশি সময় পর পাঁচ হাজার পয়েন্টে ফিরেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক। গতকাল মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৩ পয়েন্ট বেড়ে দিন শেষে অবস্থান করে পাঁচ হাজার পয়েন্টে। এদিকে সূচকের এই ধারাবাহিক উত্থানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই। তাদের অভিমত, পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে। ফলে এখানে বাড়ছে বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ। যার প্রভাব পড়েছে সূচকে।
গতকালের বাজার চিত্রে দেখা যায়, সকাল থেকেই ডিএসইর সবগুলো সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল। লেনদেন শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই সূচক পাঁচ হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করে। এক সময় সূচক পাঁচ হাজার ৪৪ পয়েন্টে চলে যায়। যদিও এটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। কারণ লেনদেন শুরুর প্রথম দুই ঘণ্টা পর বাজারে সেল প্রেশার বেড়ে যায়। যে কারণে সকালের তুলনায় শেয়ারদরও কিছুটা কমতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে সূচক। দিনশেষে যা স্থির হয় পাঁচ হাজার ১৬ পয়েন্টে। ২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি নতুন সূচক চালু হওয়ার পর এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে। এর আগে ২০১৪ সালের ৬ নভেম্বর সূচক অবস্থান করে পাঁচ হাজার ২৫ পয়েন্টে। প্রসঙ্গত, ডিএসইর নতুন সূচকের ভিত্তি ধরা হয়েছিল চার হাজার ৫৫ দশমিক ৯১ পয়েন্ট।
এদিকে গতকাল প্রধান সূচকের পাশাপাশি বাড়ে অন্য দুটি সূচকও। দিনশেষে ডিএসইর শরিয়া সূচক এক পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ১৮২ পয়েন্টে। অন্যদিকে ডিএস-৩০ সূচক বাড়ে ৯ পয়েন্ট। দিনশেষে যা স্থির হয় এক হাজার ৮০৭ পয়েন্টে। গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল এক হাজার ২১০ কোটি টাকা।
বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘সার্বিক পুঁজিবাজার এখন স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে। ফলে এর প্রভাব পড়ছে লেনদেন ও সূচকে। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের যে আকার, তাতে সূচক পাঁচ হাজার পয়েন্টে যাওয়াটা স্বাভাবিক। বাজার পরিস্থিতি ভালো থাকলে সূচক আরও বাড়লেও কোনো ক্ষতি নেই।’
এদিকে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য চাইলে ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর বাজার স্থিতিশীল পর্যায়ে রয়েছে। ফলে সবারই বাজারের প্রতি আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। এতে বাজারে প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। এই বাজারে দেখে-শুনে বিনিয়োগ করলে প্রফিট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিনিয়োগের মানসিকতা রাখতে হবে। ডে-ট্রেডার হলে চলবে না।’
সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বলছেন, বাজারে এখন স্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে, এটা তাদের জন্য ভালো খবর। তবে এই ধারা যেন অব্যাহত থাকে এ প্রত্যাশা করেন তারা। তারা বলেন, আগে অনেকবার বাজারে শুভ সংকেত এসে তা থেমে গেছে। আশা করছি এবার তেমনটি হবে না। এজন্য বিএসইসিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে বাজারের প্রতি কঠোর নজরদারির আহ্বান জানান তারা।