সাইদ সবুজ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারগুলোয় দফায় দফায় চালের দাম বাড়ছে। এর আগে মার্চ, এপ্রিল ও জুন মাসে কয়েক দফায় চালের দাম বাড়ে। তবে মে মাসে একবার কমেছিল। তারপর জুলাই থেকে প্রায় দুই মাস চালের দাম স্থিতিশীল থাকলেও চলতি সপ্তাহ থেকে আবার বাড়তে শুরু করেছে। চট্টগ্রামের চালের আড়ত চাক্তাইয়ের চালপট্টি ও পাহাড়তলীতে তিন দিনের ব্যবধানে নাজিরশাইল, জিরাশাইল (সিদ্ধ), মিনিকেট (সিদ্ধ), বাসমতি (সিদ্ধ), স্বর্ণা (সিদ্ধ), বেতি, পাইজাম (আতপ), মিনিকেট (আতপ), কাটারীভোগ আতপ ও মোটা সিদ্ধ ৫০ কেজির প্রতি বস্তা চালে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে গেছে।
পাহাড়তলী পাইকারি বাজারের বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এসএম নিজাম উদ্দিন শেয়ার বিজকে বলেন, বাংলাদেশের চালের বাজার সরকারের হাতে নেই। এখানে ব্যবসায়ীরা শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। তারা ইচ্ছা করলে দাম বাড়াতে পারে। উত্তরবঙ্গের মিল মালিকরাদের সঙ্গে কিছু মধ্যস্বত্বভোগী মিলে সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়াচ্ছে। চালের দাম বাড়ার পেছনে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের হাত নেই। বেশি দামে কেনার ফলে এখানকার পাইকারি বাজারে চালের দাম বেড়েছে। একই সঙ্গে বর্তমানে বাজারে মোটা চালের সংকট রয়েছে। মোটা চাল ২০০ টাকা বেড়ে বর্তমানে এক হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গতকাল নগরীর বৃহত্তম পাইকারি বাজার পাহাড়তলী ও চাক্তাইয়ের চালপট্টি ঘুরে দেখা যায়, স্বর্ণা সিদ্ধ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ২০০ টাকা, যা আগে এক হাজার ৯৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। একই সঙ্গে স্বর্ণা আতপ প্রতি বস্তা ২০০ টাকা বেড়ে দুই হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেতি আতপ ২০০ টাকা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ১০০ টাকায়। নাজিরশাইল সিদ্ধ আগে দুই হাজার ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল বিক্রি হয়েছে দুই হাজার ৭০০ টাকায়। জিরাশাইল ৩০০ টাকা বেড়ে দুই হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট সিদ্ধ ১০০ টাকা বেড়ে দুই হাজার ২৫০ টাকা ও মিনিকেট আতপ ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে দিনাজপুরি পাইজাম সিদ্ধ ২০০ টাকা বেড়ে দুই হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, আর আতপ ১৫০ টাকা বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ২০০ টাকা। কাটারিভোগ সিদ্ধ ১০০ টাকা বেড়ে দুই হাজার ৩০০ টাকা ও আতপ ৫০ টাকা বেড়ে দুই হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিনিগুঁড়া চালের মানভেদে দুই হাজার ৩০০ টাকা থেকে চার হাজার টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে এসব চালের দাম আগের মতোই রয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
তবে সরেজমিনে দেখা যায়, এসব পাইকারি বাজারের প্রতিটা গুদামে পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল মজুত রয়েছে। আর চালকল মালিকদের দাম বৃদ্ধিকে পুঁজি করে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে চালের দাম।
চট্টগ্রাম রাইস মিল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি শান্ত দাশগুপ্ত বলেন, ‘বাজারে ধান-চাল দুটোরই সংকট রয়েছে। আর সংকট থাকায় প্রতি মণ ধানের ক্রয়মূল্য বেড়েছে ৭০-৮০ টাকা পর্যন্ত। এতে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে।
এদিকে অতিরিক্ত শুল্কের কারণে দেশে চাল আমদানি হয় না। চাল আমদানির বিপরীতে সরকার ৫৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। যদি এই শুল্ক কিছুটা কমানো হয়, অর্থাৎ ২৫ শতাংশ করা হলেও দেশে চাল আমদানি বাড়ত। তাতে বর্তমান বাজারমূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে চাল বিক্রি করা যেত।’