নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদ্যুতের পাইকারি (বাল্ক) পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির ঘোষণা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান আবদুল জলিল। যে কোনো দিন দাম বাড়ার ঘোষণা আসতে পারে। গতকাল এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দাম ঘোষণা করব। ৫০-৬০ পৃষ্ঠার একটা রায়, প্রতিটি শব্দ দেখে দিতে হয়। এজন্য একটু সময় লাগছে। রায় ঘোষণার কাজটি ফাইনাল স্টেজে আছে। এটি ২-১ দিনের মধ্যেও হতে পারে। ২-১ দিনটা ৪-৫ দিনও হতে পারে।’ বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর আবেদনের গণশুনানি হয়েছিল গত ১৮ মে। গণশুনানিতে বিদ্যুতের দাম প্রায় ৫৮ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছিল বিইআরসির টেকনিক্যাল কমিটি। আইন অনুযায়ী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে রায় ঘোষণা করতে হবে। এ হিসাবে ১৩ অক্টোবরের মধ্যে বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম এখনই বাড়ছে না। কারণ হিসেবে বিইআরসি বলছে, বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিটি কোম্পানি মুনাফায় রয়েছে। তাই বাল্ক বিদ্যুতের দাম ২০-২৫ শতাংশ বাড়ালে তাদের খুব একটা সমস্যা হবে না।
বিইআরসি সূত্র জানায়, কমিশন ১৫-২৫ শতাংশের মধ্যে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব চূড়ান্ত করে রেখেছে। এরই মধ্যে তা বিদ্যুৎ বিভাগে জমাও দেয়া হয়েছে। সরকার চাইলে এটি বাড়াতে কিংবা কমাতে পারে। এক্ষেত্রে সরকার কতটা ভর্তুকি দেবে তার ওপর নির্ভর করবে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির হার।
প্রসঙ্গত, পিডিবি ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে ৮ টাকা ৫৮ পয়সা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছিল। বর্তমানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৫ টাকা ১৭ পয়সা। তবে বিইআরসির কারিগরি কমিটি গণশুনানিতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মূল্য ভর্তুকি ছাড়া ৮ টাকা ১৬ পয়সা নির্ধারণের সুপারিশ করে। তবে সরকার ভর্তুকি দিলে সে অনুপাতে বিদ্যুতের দাম কম বাড়ানো হবে।
গত এক যুগে ৯ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এ সময়ে পাইকারি পর্যায়ে ১১৮ শতাংশ ও গ্রাহক পর্যায়ে ৯০ শতাংশ দাম বেড়েছে। সর্বশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। ওই সময় পাইকারি পর্যায়ে ৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ ও গ্রাহক পর্যায়ে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়। তবে এবার গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে না।