Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 10:56 am

পাকস্থলীর সমস্যা গ্যাস্ট্রোপেরেসিস

গ্যাস্ট্রোপেরেসিস মানে হলো পাকস্থলীর প্যারালাইসিস বা স্থবির হওয়ার মতো একটি অবস্থা। সহজ ভাষায় বলতে গেলে গ্যাস্ট্রোপেরেসিস হলে পাকস্থলীর খাবার হজমের পরবর্তী প্রক্রিয়ায় ক্ষুদ্রান্ত্রে পৌঁছাতে অনেক দেরি হয়ে যায়। কারণ পাকস্থলী তার মধ্যকার খাবার সময়মতো পরিপাকতন্ত্রের পরবর্তী অংশ ডিউডেনামে ঠেলে দিতে পারে না।

আমাদের শরীরের স্নায়ুতন্ত্রে ভেগাস নার্ভ নামে একটি স্নায়ু আছে, যেটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে এমনটি হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি ডায়াবেটিসের কারণে অটোনমিক নিউরোপ্যাথি হয়ে ভেগাস নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তা ছাড়া পাকস্থলী ও ক্ষুদ্রান্ত্রের কোনো অপারেশনের সময়ও ভেগাস নার্ভের ক্ষতি হতে পারে। কিছু রোগের কারণেও গ্যাস্ট্রোপেরেসিস হতে পারে। কিছু কিছু ওষুধের জন্য দায়ী হয়ে থাকে।

কীভাবে বুঝবেন: ক্ষুধামান্দ্য, বমি বমি ভাব, বমি, পেট ফাঁপা, পেটে ব্যথা, অ্যাসিড রিফ্ল্যাক্স, স্বাস্থ্যহানি, ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে এর কারণে। সামান্য কিছু খেলেই পেট ভরা লাগে, সহজে আর খেতে ইচ্ছা করে না।

চিকিৎসা কী: একবারে বেশি খাওয়া যাবে না। সারা দিনে ভাগ করে কম কম করে খেতে হবে। খাবার সময় নিয়ে ভালো করে চিবিয়ে খেতে হবে। অ্যালকোহল ও ধূমপান বর্জন করুন। পানি বেশি করে পান করতে হবে। কিছু ওষুধ ব্যবহার করা হয়, কখনও কখনও শল্যচিকিৎসারও প্রয়োজন হতে পারে।

জটিলতা: গ্যাস্ট্রোপেরেসিসের কারণে পানিশূন্যতা, অপুষ্টি, অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়াল ওভার গ্রোথ ইত্যাদি হতে পারে। তা ছাড়া কিছু নির্দিষ্ট খাবার দীর্ঘদিন জমতে জমতে শক্ত চাকা হয়ে যেতে পারে, যেটাকে মেডিকেলের ভাষায় বিজোয়ার বলা হয়ে থাকে। এটি বের করতে অনেক সময় সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।

ডা. মোহাম্মদ জাকির হোসেন

সহযোগী অধ্যাপক, পরিপাকতন্ত্র, লিভার ও প্যানক্রিয়াস রোগ বিভাগ

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, ঢাকা