Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 2:16 am

পাকিস্তানকে ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার দেবে চীন-সৌদি

শেয়ার বিজ ডেস্ক: পাকিস্তানকে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার দেবে চীন-সৌদি। এ ঋণ ও সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছে পাকিস্তানের দুই পুরোনো মিত্র চীন ও সৌদি আরব। খবর: ব্ল–মবার্গ।

পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইশাক দার গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এই ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের মধ্যে ৫৭০ কোটি ডলার ঋণ হিসেবে দেয়া হবে। বাকি অর্থ দেয়া হবে আর্থিক সহায়তা হিসেবে।

পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদদের মতে, চলতি অর্থবছরে সরকার যে পরিমাণ বৈদেশিক বিনিয়োগ আসতে পারে বলে ধারণা করেছিল, শতকরা হিসাবে এ অর্থের পরিমাণ তার ৩৮ শতাংশ।

চীনের কাছে পাকিস্তানের বকেয়া ঋণ জমেছে ৭৩০ কোটি ডলার। গত ২ নভেম্বর চীন সফরে গিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বকেয়া ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়ানো এবং আরও ১৫০ কোটি ডলার নতুন ঋণের আবেদন করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের কাছে। তার আবেদনে সাড়া দিয়ে জিনপিং ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়িয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে। এছাড়া ১৫০ কোটি ডলার ঋণসহ ৬০০ কোটি টাকার সহায়তা করা হবে বলে শেহবাজকে আশ্বাস দিয়েছেন জিনপিং।

ওদিকে সম্প্রতি সৌদি সরকারের কাছে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছিল পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পাকিস্তানকে মোট ৬৬০ কোটি ডলার দেবে সৌদি আরব। এর মধ্যে ২৪০ কোটি ডলার ঋণ ও ৪২০ কোটি ডলার সহায়তা হিসেবে দেয়া হবে।

দীর্ঘদিনের সামরিক শাসন, প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের কারণে ২০১৭ সাল থেকে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে দুরবস্থা চলছিল। সংকট কাটিয়ে উঠতে ওই সময় থেকেই চীনের কাছ থেকে ঋণ নেয়া শুরু করে দেশটির সরকার। এছাড়া বিভিন্ন সময় সৌদির কাছ থেকে ঋণ নেয়া শুরু করে দেশটির সরকার। তার আগেও অবশ্য বিভিন্ন সময়ে এ দুই দেশের কাছ থেকে আর্থিক ঋণ নিয়েছে পাকিস্তান।

বিদেশি মুদ্রার মজুত কমে যাওয়ায় চলতি বছরের শুরু থেকে ক্ষতিতে পড়ে পাকিস্তানের অর্থনীতি। উপরন্তু বর্ষায় ব্যাপক বর্ষণ ও তার প্রভাবে দেশটির উত্তর দিকের পার্বত্য অঞ্চলের হিমবাহ গলে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে দেশটি। ইতিহাসে এত বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ এর আগে দেখেনি পাকিস্তান। গত জুনে শুরু হওয়া এ দুর্যোগে দেশটির এক তৃতীয়াংশের বেশি এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়, নিহত হয় প্রায় ২ হাজার মানুষ। বন্যায় লাখ লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। মারা গেছে হাজার হাজার গবাদিপশু। এছাড়া বাঁধ ও অন্যান্য সরকারি স্থাপনারও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরকারি হিসাবে

বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছে ৩ হাজার কোটি ডলারে।

গত বৃহস্পতিবার রিজার্ভের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান (এসবিপি)। এতে দেখা গেছে, দেশটির সর্বমোট তারল্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন (১৪ হাজার ৬৮০ কোটি) ডলারে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় নিট বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ৫ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন (৫৭৭ কোটি) ডলার। এসবিপি জানিয়েছে, সবশেষ সপ্তাহে তাদের রিজার্ভ ১ হাজার ৪৭৩ মিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন সেটা

গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৮৯১২ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারে। সম্প্রতি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) থেকে ১ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ডলার পাওয়া গেছে, যা দেশটির রিজার্ভ বাড়াতে সহায়তা করেছে।