পাকিস্তানে প্রতিলিটার পেট্রোল ২৪৯ রুপি, বিদ্যুৎ সংকট চরমে

শেয়ার বিজ ডেস্ক: পাকিস্তানে ফের বাড়ানো হয়েছে জ্বালানি তেলের দাম। গত বৃহস্পতিবার ক্যাটেগরি ভেদে পেট্রোলিয়াম পণ্যের দাম বাড়ানো হয় ১৫ থেকে ১৮ রুপি পর্যন্ত। এ কারণে প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৯ রুপিতে। গতকাল শুক্রবার থেকে দেশটিতে নতুন এই দাম কার্যকর হয়েছে। এছাড়া ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকটে পড়েছে দেশটি। সংকট এতটাই তীব্র যে, সে দেশের ইন্টারপরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাহবাজ সরকার। খবর: এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

পাকিস্তানের গণমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানায়, শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে নতুন জোট সরকার পাকিস্তানে ক্ষমতায় আসার পর এ নিয়ে চার দফায় পেট্রোলের দাম ৮৪ রুপি বাড়াল। সরকার প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম ১৪ দশমিক ৮৫ রুপি বাড়িয়েছে। এতে প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম ২৩৩ দশমিক ৮৯ রুপি থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ২৪৮ দশমিক ৭৪ রুপিতে। এছাড়া হাই স্পিড ডিজেল (এইচএসডি) প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ২৩ রুপি বাড়িয়ে ২৬৩ দশমিক ৩১ রুপি থেকে ২৭৬ দশমিক ৫৪ রুপি করা হয়েছে।

কেরোসিন তেলের দামও বাড়িয়েছে পাকিস্তান সরকার। অন্যান্য তেলের তুলনায় কেরোসিন তেলের দাম সবচেয়ে বেশি বাড়ানো হয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্তে লিটারে ১৮ দশমিক ৮৩ রুপি বাড়ানোর পর লিটার তেলের দাম ২১১ দশমিক ৪৩ থেকে বেড়ে ২৩০ দশমিক ২৬ রুপি করা হয়েছে। এছাড়া লো ডিজেল অয়েলের (এলডিও) দাম প্রতি লিটারে ১৮ দশমিক ৬৮ রুপি বেড়ে ২০৭.৪৭ থেকে ২২৬.১৫ রুপি করা হয়েছে।

এছাড়া পেট্রোলে প্রতি লিটার পেট্রোলিয়াম শুল্ক ধার্য করেছে ১০ রুপি, এইচএসডিতে প্রতি লিটারে ৫ রুপি, কেরোসিন তেলে প্রতি লিটারে ৫ রুপি ও এলডিও-তে প্রতি লিটারে ৫ রুপি।

পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল জানান, আইএমএফের সঙ্গে কথাবার্তা অনেক দূর এগিয়েছে। আইএমএফের সাহায্য পাওয়ার ব্যাপারে তারা আশাবাদী। পাকিস্তান মেমোরেন্ডাম অব ইকোনমিক অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল পলিসিজ (এমইএফপি) পেয়েছে। সপ্তম ও অষ্টম রাউন্ডের আলোচনার আগে কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরি। তাই এই প্রোগ্রাম চালু করার জন্য পেট্রোলিয়াম ডেভেলপমেন্ট লেভির পরিমাণ বাড়াতে হবে বলে জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রীর দাবি, ইমরান খান সরকার প্রতি মাসে পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থের দাম লিটারপ্রতি চার রুপি করে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু তারা আইএমএফকে দেয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে ভর্তুকিও দেয়। এ কারণে দেশের অর্থনীতি আরও চাপে পড়ে। তাই অর্থ মন্ত্রণালয় বিগত সরকারের নেয়া কিছু কর্মসূচি আবার শুরু করেছে। আর আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ছে। তাই তাদেরও দাম বাড়াতে হচ্ছে।

এদিকে বিদ্যুৎ সংকটের কারণে পাকিস্তানকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দেশকে অন্ধকারে কাটাতে হবে। সপ্তাহে টানা দুই থেকে তিন দিন বিদ্যুৎ যোগাযোগ বিচ্ছিন্নও থাকতে পারে। গতকাল শুক্রবার পাকিস্তান ন্যাশনাল ইনফরমেশন টেকনোলজি বোর্ডের তরফ থেকে বলা হয়, দেশে ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ বাঁচাতে ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এর আগে গত সোমবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্যে বিদ্যুৎ সংকটের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয় তরল প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটছে, যার প্রভাব পড়ছে বিদ্যুৎ উৎপাদনে। তবে পাকিস্তান বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সরকার আরোপিত শর্ত মানতে অস্বীকার করায় চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি বলে জানায় এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। বিদ্যুৎ বাঁচাতে সরকার ইতোমধ্যে অফিস-আদালতের কাজের সময়সীমা কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটি, যা আগে ছিল মাত্র একদিন, বর্তমানে তা দুইদিন করা হয়েছে। শুক্রবার নামাজের পর অফিস আদালত, বেসরকারি দপ্তর ছুটি ঘোষণার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০