পাকুন্দিয়ায় সুস্বাদু স্কোয়াশ কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক

স্কোয়াশ একটি বিদেশি সবজি। ইউরোপে জুকিনি ও সৌদি আরবে কোচা নামে পরিচিত। বিশ্বের অনেক দেশে এটি জনপ্রিয় সবজি। কুমড়া গোত্রের সবজিটি খেতে সুস্বাদু। বাংলাদেশে দুটি রঙের স্কোয়াশ দেখতে পাওয়া যায়। সবুজ ও হলুদের মধ্যে সবুজ স্কোয়াশ বেশ জনপ্রিয়। উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় বাংলাদেশের কৃষকদের কাছে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এটি।
বীজ বপন করার ৩০ দিনের মধ্যে ফুল আসতে শুরু করে। ৪৫ দিন থেকে ফসল সংগ্রহ শুরু হয়, প্রায় ৮০ দিন পর্যন্ত ফসল সংগ্রহ করা যায়। প্রতিটি গাছেই ১০ থেকে ১৫টি পর্যন্ত ফল ধরে। জাতভেদে প্রতিটি সবজি এক থেকে তিন কেজি ওজনের হয়। এর খুচরা বাজারমূল্য কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। পাইকারি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হয়। রোগবালাইয়ের মধ্যে মোজাইক ভাইরাস ও ফ্রুট ফ্লাইয়ের আক্রমণ লক্ষ করা যায়। তবে সময়মতো দমন ব্যবস্থা নিলে স্বচ্ছন্দে ফসল ঘরে তোলা যায়। তাই অনেক কৃষকের মতো কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার আঙ্গিয়াদী গ্রামের কৃষক আতাবুর রহমান ১৫ শতক জমিতে স্কোয়াশ চাষ করেন।
সরেজমিনে আঙ্গিয়াদী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক আতাবুর রহমান ১৫ শতক জমিতে স্কোয়াশ চাষ করেছেন। সময়মতো সেচ দিয়েছেন তিনি। ফ্রুট ফ্লাইয়ের জন্য ফাঁদ ব্যবহার ও মোজাইক ভাইরাসের জন্য ছত্রাকনাশক স্প্রে করায় তার জমিতে কোনো ধরনের রোগবালাইয়ের আক্রমণ পরিলক্ষিত হয়নি। এরই মধ্যে বিক্রিও শুরু করেছেন তিনি। তার ধারণা, ১৫ শতক জমি থেকে ৪০ মণ স্কোয়াশ পাওয়া যাবে, যার বাজারমূল্য ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। জমি প্রস্তুত, বীজবপন, সার ও কীটনাশক বাবদ তার খরচ হয়েছে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা। মাত্র দুই মাসে এমন ফল দেখে অন্য কৃষকরাও স্কোয়াশ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
আতাবুর রহমান বলেন, উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হামিমুল হক সোহাগ তাকে সবজিটি সম্পর্কে ধারণা দেন। এতে তিনি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তার পরামর্শে আমি বীজ সংগ্রহ করে ১৫ শতক জমিতে এ সবজি চাষ করি। অল্প সময়ে এত ফলন আসায় আমি আনন্দিত। আমি আরও দুই বিঘা জমিতে চাষ করার পরিকল্পনা নিয়েছি।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হামিমুল হক সোহাগ জানান, স্কোয়াশ উচ্চ ফলনশীল কুমড়া গোত্রীয় সবজি। এ সবজিতে শসা ও কুমড়ার মিশ্রণ স্বাদ পাওয়া যায়। বিভিন্ন রেস্টুরেন্টসহ স্থানীয় বাজারেও এ সবজির চাহিদা রয়েছে। তাই সহজে সবজিটি চাষ করে কৃষকরা লাভবান হতে পারেন।
পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল হাসান আলামিন বলেন, লাভজনক সবজি আবাদে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কম সময়ে বেশি ফলন পাওয়ায় অনেক কৃষক স্কোয়াশ চাষে আগ্রহী হচ্ছে। ঝিঙ্গা, করলা ও অন্যান্য সবজির সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে স্কোয়াশ চাষ করে কৃষকদের অতিরিক্ত মুনাফা হচ্ছে। ধীরে ধীরে এই উপজেলায় স্কোয়াশ চাষ আরও বাড়বে।

সাজন আহম্মেদ পাপন, কিশোরগঞ্জ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০