নিজস্ব প্রতিবেদক: গত সপ্তাহে সূচক ও লেনদেনের নামমাত্র উত্থানের মাধ্যমে পার করছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহটিতে সূচক বৃদ্ধির সঙ্গে লেনদেন বেড়েছে। তবে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল। এদিকে গত সপ্তাহে উত্থানের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহের শীর্ষে থাকা পাট খাতে বড় পতন হয়েছে। ফলে আলোচ্য খাতে শেয়ারদর সব থেকে বেশি কমেছে। এছাড়া গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে আইটি খাতে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কাগজ ও মদ্রণ খাতের শেয়ার। গত সপ্তাহে শেয়ারদর বৃদ্ধির দিক থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে যথাক্রমে ছিল ভ্রমণ ও অবকাশ এবং সেবা ও আবাসন খাত।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে আগ্রহ বেশি থাকা আইটি খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৬ দশমিক ৪০ শতাংশ। এ খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ বা ৩২৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা কাগজ খাতে গত সপ্তাহে দর বেড়েছে ৫ দশমিক ১০ শতাংশ। এ খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৭০ শতাংশ বা ১৬৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহে ৪ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে তৃতীয় স্থানে ছিল ভ্রমণ খাত। খাতটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের দশমিক ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ বা ১২৩ কোটি টাকা। গত সপ্তাহে চতুর্থ স্থানে থাকা সেবা খাতে শেয়ারদর বেড়েছে ৪ শতাংশ। এ খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪ শতাংশ বা ৮৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এদিকে গত সপ্তাহে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে পাট খাতে। এ খাতে গত সপ্তাহে ৪ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। খাতটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের দশমিক ২০ শতাংশ বা ৪২ লাখ টাকা। গত সপ্তাহে দশমিক ৯০ শতাংশ শেয়ারদর কমে ট্যানারি দ্বিতীয় স্থানে ছিল। গত সপ্তাহে শেয়ার দর কমায় তৃতীয় স্থানে ছিল খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত। খাতটিতে দশমিক ৭০ শতাংশ শেয়ার দর কমেছে। এছাড়া গত সপ্তাহে সিমেন্ট, আর্থিক এবং টেলিকমিউনিকেশন খাতের শেয়ার দর কমা বা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন হয়নি।
অন্যদিকে গত সপ্তাহে লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওষুধ খাতে। খাতটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৬ দশমিক ১০ শতাংশ বা ৩৪১ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। কিন্তু খাতটিতে গত সপ্তাহে দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে। এরপর তৃতীয় স্থানে থাকা বিবিধ খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১২ দশমিক ৭০ শতাংশ বা ২৬৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। কিন্তু এ খাতে গত সপ্তাহে মাত্র ২ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১২১ কোটি ৪০ লাখ ৫৭ হাজার ৯১৯ টাকার শেয়ার। আগের সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১৩২ কোটি ৯৬ লাখ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে ৯৮৮ কোটি ৪৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকার বা ৮৭ দশমিক ২৪ শতাংশ লেনদেন বেড়েছে।
ডিএসইতে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স সপ্তাহের ব্যবধানে ২১ দশমিক ০৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৪ শতাংশ বেড়ে ৬ হাজার ২১৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
আলোচিত সপ্তাহে বাজারমূলধনের শীর্ষ ৩০ কোম্পানির মূল্যসূচক ডিএস৩০ আগের সপ্তাহের চেয়ে ৫ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট বা দশমিক ২৬ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ১৯৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্যদিকে ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ৪ দশমিক ৩০ পয়েন্ট বা দশমিক ৩২ শতাংশ বেড়েছে।
ডিএসইতে গত সপ্তাহে ৪০০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট কেনাবেচা হয়। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৬২টির, কমেছে ১০৮টির। আর ২১০টির দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৬০ হাজার ৬০৮ কোটি ৮১ লাখ ৮৯ হাজার ২৪৬ টাকা। আর সপ্তাহ শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন নেমেছে ৭ লাখ ৫৪ হাজার ৬৯২ কোটি ৩৩ লাখ ৪৫৪ টাকায়।