পাট নিয়ে সমন্বিত প্রকল্প হবে: কৃষিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাটের বীজ উৎপাদন থেকে শুরু করে সোনালি আঁশ বাজারজাত করার মাধ্যমে কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে একটি সমন্বিত প্রকল্প নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। সচিবালয়ে গতকাল উচ্চফলনশীল পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন নিয়ে এক সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের এ যৌথ সভায় ঠিক হয়েছে যে, বেসরকারি সংস্থাসহ আরও যারা সংশ্লিষ্ট রয়েছেন, তাদের নিয়ে একটি সমন্বিত কর্মসূচি নেয়া হবে। শুধু পাটবীজ উৎপাদন করলেই হবে না, চাষির কাছে বিতরণ, কৃষকের উৎপাদিত পাট দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রির নিশ্চয়তা দেয়াসহ ভ্যালু চেইনের প্রত্যেকটি জায়গা আমাদের অ্যাড্রেস করতে হবে, না হলে আমরা সফল হব না। কৃত্রিম তন্তু পরিবেশের ক্ষতি করছে বলে জানিয়ে রাজ্জাক বলেন, ‘সে কারণেই পাটের অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের দুই মন্ত্রণালয়কে পাটের জোগান দিতে হবে।’

তিনি বলেন, পাট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশ পাটের বীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে। আমিও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, অর্থের কোনো সমস্যা হবে না। বীজ উৎপাদন করতে এত বেশি টাকার দরকার হয় না। পাটবীজের ক্ষেত্রে আমরা অন্যের ওপর নির্ভরশীল হব না। পাটকে আমরা বাংলাদেশের চাষিদের জন্য একটা লাভজনক ফসলে উন্নীত করব। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে পাট আবার অসাধারণ ভূমিকা রাখবে।

ভর্তুতি দিয়ে হলেও পাটবীজের উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর বলেন, পাটবীজের ক্ষেত্রে ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে নিজেরদের পায়ে দাঁড়াতে হবে, তা না হলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আমরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি, তাতে অনেকের চক্ষুশূল হতে পারি। পাটটা আমাদের নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে, নাহলে ভবিষ্যতে সমস্যা দেখা দেবে। পাটপণ্যে ভারত আমাদের ওপর এন্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছে, এজন্য আমরা তিন থেকে চার হাজার কোটি টাকার পাটপণ্য ভারতে রপ্তানি করতে পারিনি। সেটাকে চ্যালেঞ্জ করে আমরা অন্যান্য দেশে গিয়ে ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি।

পাটমন্ত্রী বলেন, কৃষক যদি পাট উৎপাদন করতে না পারে, দেশের পাটশিল্প বসে পড়বে। একটির সঙ্গে অন্যটি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। সুতরাং কৃষককে লাভবান করতে হবে। এবার পাটের দাম বেশি হওয়ায় শিল্পকারখানাগুলো কিনতে পারছিল না বলে জানিয়ে পাটমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীরা কাঁচা পাট রপ্তানিতে শুল্কারোপের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আমরা শুল্ক বসানোর চিন্তা-ভাবনা করছিলাম, এটা প্রধানমন্ত্রীর নলেজে যায়। তিনি বলেছেন, খবরদার তুমি এই ধারায় যাবে না। কৃষকরা যদি এবার লাভবান হয়, আগামী বছর কৃষকরা বেশি উৎপাদন করবে, লাভবান না হলে ফসল করবে না।

কৃষি সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, সাবেক কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামানসহ কৃষি ও পাট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং মন্ত্রণালয়গুলোর অধীন সংস্থার প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০