Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 3:17 pm

পাতরাইল দিঘিরপাড়ের আউলিয়া মসজিদ

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের পাতরাইল দিঘিরপাড়ের বহু গম্বুজবিশিষ্ট আউলিয়া মসজিদ বা গায়েবানা মসজিদ বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন মসজিদ। প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। আয়তকার মসজিদটি ফরিদপুরে আবিষ্কৃত মসজিদগুলোর মধ্যে সর্ববৃহৎ।

আউলিয়া মসজিদটি কবে নির্মিত হয়েছে সে ইতিহাস আজও জানা যায়নি। তবে লোকমুখে যতদূর জানা যায়, ১৩৯৩ হতে ১৪১০ সালের মধ্যে সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের আমলে এটি নির্মাণ করা হয়। সে সময় আবদুল্লাহ খান শিষ্যদের নিয়ে এ অঞ্চলে ইসলাম প্রচারে আসেন। তারই উদ্যোগ ও তত্ত্বাবধানে মসজিদটি নির্মিত হয়। পরে তার নামানুসারে মসজিদের নামকরণ হয় ‘আউলিয়া মসজিদ’।

দুর্লভ প্রাচীন কারুকার্যখচিত মসজিদ এটি। এখানে রয়েছে বিখ্যাত সুফি সাধক আউলিয়া আবদুল্লাহ খান মজলিসের মাজার, দিঘি, খেলার মাঠ, মাদরাসা ও পোস্টঅফিস। এ দুর্লভ পুরাকীর্তির দেয়ালে খচিত রয়েছে ঐতিহ্যমণ্ডিত প্রাচীন কারুকার্য। রং ও ডিজাইনে রয়েছে অনাবিল শৈল্পিক সৌন্দর্যের ছাপ। এর নকশা ও স্থাপত্যশৈলী রাজশাহীর বাঘা মসজিদের মতো।

মসজিদের দুই পাশে রয়েছে দুটি সুবিশাল দিঘি। দিঘিগুলোর ইতিহাস জড়িত মসজিদের সঙ্গেই। এখানে এক সময় পানির প্রচণ্ড অভাব ছিল। এলাকার প্রজাদের পানীয়জলের সমস্যা নিরসন ও ইবাদতের জন্য মসজিদের পাশে ৩২.১৫ একর জমির ওপর একটি দিঘি খনন করা হয়। পরে দিঘির নামের সঙ্গে যুক্ত করে এলাকার নামকরণ করা হয় ‘পাতরাইল দিঘিরপাড়’।

আউলিয়া খান মারা যাওয়ার পর মসজিদের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। এ ঐতিহাসিক মসজিদের দক্ষিণ দিকে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন মহান মজলিস আউলিয়া খান। মসজিদের আঙিনায় আছে মস্তান দরবেশ নাজিমুদ্দিন দেওয়ানের মাজার। আউলিয়া খানের মাজারের দক্ষিণ পাশে আছে ফকির ছলিমুদ্দিন দেওয়ানের মাজার। মাজারের পাশে শিষ্যদেরও কবর রয়েছে।

মসজিদটি বর্তমানে রয়েছেপ্রত্ন তত্ত্ব বিভাগের নিয়ন্ত্রণে। রাজধানী থেকে খুব সহজে ওখানে যাওয়া যায়।

 

শিপন আহমেদ