Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 2:02 pm

পানিতে ডুবল রাজধানীর সড়ক-অলিগলি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সকাল থেকেই ঢাকায় মুষলধারে বৃষ্টি ঝরছে। সকাল ৬টা থেকে বৃষ্টি নামে। বৃষ্টির পানিতে ইতোমধ্যে বেশিরভাগ এলাকার রাস্তায় পানি জমে যায়। এতে করে দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারীরা। গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাস্তাঘাটে মানুষজন কম। বেশিরভাগ সড়কও ফাঁকা। গতকাল ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা ছিল। তাই সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছিলেন এ পরীক্ষায় অংশ নেয়া চাকরিপ্রার্থীরা।

এদিকে দেশের সব বিভাগেই গতকাল শুক্রবার বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। তারা জানিয়েছে, সারাদেশে শুক্রবার বৃষ্টি আরও বাড়তে পারে। মেঘলা থাকতে পারে সারাদেশের আকাশ। ফলে সারাদেশের দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমে আসতে পারে। আজ শনিবার থেকে বৃষ্টি আরও কমে আসতে পারে।

শুক্রবার সকাল থেকে ঝরা বৃষ্টির ফলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কিছু অংশ, মেরুল বাড্ডা, ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকায়, মোহাম্মদপুর, ইসিবি, মালিবাগ, শান্তিনগর, সায়াদাবাদ, আগারগাঁও থেকে জাহাঙ্গীর গেট যেতে নতুন রাস্তায়, খামারবাড়ি থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট-তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড-সংলগ্ন এলাকা, শনির আখড়া, পুরান ঢাকা, বংশাল, নাজিমুদ্দিন রোড, ধানমন্ডি, মিরপুর-১৩, হাতিরঝিলের কিছু অংশ, গুলশান লেকপাড় এলাকার সংযোগ সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলিতে কিছু পরিমাণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

সকাল সকাল কাজে বের হওয়া মানুষগুলোর মধ্যে একজন সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ভোর থেকে বলতে গেলে এই বৃষ্টি হচ্ছে। একে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ও বৃষ্টির কারণে গণপরিবহন নেই বললেই চলে। বিভিন্ন সড়ক, অলিগলিতে হাঁটুপানি জমেছে। আমি কারওয়ান বাজার থেকে জরুরি একটি কাজে গুলশান এসেছি। মাঝপথে বিভিন্ন এলাকায় দেখলাম সড়কে পানি জমে গেছে।’

এদিকে মোহাম্মদপুরের দিক থেকে বিজয় সরণি হয়ে তেজগাঁওয়ের মধ্য দিয়ে হাতিরঝিলে আসা নাজিম উদ্দিন নামের একজন সিএনজি চালক বলেন, ‘আমি আসার পথে দেখলাম অনেক রাস্তা, অলিগুলি পানিতে ডুবে গেছে। রাস্তার মধ্যে জমে থাকা পানির কারণে দুই একটা সিএনজি স্টার্ট বন্ধ হয়ে ঠেলতে দেখেছি। পূর্ব রাজধানীর সড়কগুলো ফাঁকা, সড়কে তেমন যানবাহন নেই, সেই সঙ্গে বাইরে কাজে বের হওয়া মানুষের সংখ্যাও হাতেগোনা। আর যারা বের হয়েছে তারা জলাবদ্ধতার ভোগান্তিতে পড়েছে।’

রাজধানীর গাবতলীর দিক থেকে আসা বৈশাখী পরিবহন বাসের চালক রমজান মিয়া বলেন, ‘ভোরবেলা থেকে বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন সড়ক ডুবে আছে, বাইরে খুব একটা মানুষ নেই। গাবতলী থেকে ট্রিপ নিয়ে আসলাম পুরো ফাঁকা গাড়ি নিয়ে। এছাড়া রাস্তাতেও তেমন একটা মানুষের দেখা নেই। বৃষ্টির কারণে বেশির ভাগ রাস্তা ডুবে আছে।’

এদিকে সকালে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা থাকায় এতে অংশগ্রহণকারীদের বিপাকে পড়তে হয়। বৃষ্টির সঙ্গে যানবাহনের স্বল্পতায় পড়তে হয় অনেককে। সকাল ৯টা থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে অনেকেই যথাসময়ে বাসা থেকে বের হতে পারেননি। আবার এই সুযোগে সিএনজি-রিকশাচালকরা ভাড়া দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়ায় গন্তব্যে যেতে হয়েছে তাদের।

রাজধানীর তিতুমীর কলেজ কেন্দ্রে নিবন্ধন পরীক্ষার সিট পড়েছে তানজিয়া শারমিন ইভার। বৃষ্টির মধ্যে ৮টার দিকে বাসা থেকে বের হন তিনি। তিনি বলেন, সকাল ৭টা থেকে প্রস্তুতি নিয়ে বসে আছি, এত বৃষ্টিতে বের হওয়ার কোনো উপায় দেখছিলাম না। অবশেষে বৃষ্টির মধ্যেই বের হতে হয়েছে। বাসা থেকে মূল সড়ক পর্যন্ত কোনো রিকশা নেই, তাই হাঁটু পানি ডিঙিয়ে হেঁটে আসতে হয়েছে।

দেশের সব বিভাগেই গতকাল বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। তারা জানিয়েছে, সারাদেশে বৃষ্টি আরও বাড়তে পারে। মেঘলা থাকতে পারে সারাদেশের আকাশ। ফলে সারাদেশের দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমে আসতে পারে। আজ শনিবার থেকে বৃষ্টি আবার কমে আসতে পারে।