Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 7:47 pm

পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে

নানাভাবে পানিবাহিত রোগ ছড়ায়। বিভিন্ন জায়গায় সুপেয় পানির অভাব রয়েছে। দূষিত পানি পান করে অনেকেই ডায়রিয়া, কলেরা, জন্ডিস, টাইফয়েডসহ পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হন।

অনেকেই নদী, খাল-বিলের আশপাশে খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ করেন। এ পয়োবর্জ্য এবং ওই এলাকার বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনায় জলাশয়ের পানি দূষিত হয়ে পড়ে। দূষিত পানি টিউবওয়েলের পানি, বিভিন্ন কাঁচা শাকসবজিতে মিশে সেসবও দূষিত করতে পারে। ভালোভাবে হাত-মুখ না ধুয়ে খাবার খেলে পানিবাহিত রোগের জীবাণু পেটে গিয়ে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।

এ ছাড়া হাটবাজারে, শহরের রাস্তায়, ফুটপাতে অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবার রান্নায় বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করা হয় না। কেউ কেউ ফুটপাতে ফলমূল কেটে দূষিত পানি দিয়ে ধুয়ে বিক্রি করেন। কেউ আবার দূষিত পানি দিয়ে শরবত তৈরি করেন। এসব উৎস থেকে লোকজন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হন।

কীভাবে পানি বিশুদ্ধ করবেন: টিউবওয়েলের বিশুদ্ধ পানি পাওয়া না গেলে বিভিন্ন জলাশয়ের ও সরবরাহ করা ট্যাপের পানি পান ও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এসব উৎসের পানি খাওয়া ও খাওয়ার আগে ফুটিয়ে বিশুদ্ধ করতে হবে। ১০ মিনিট ফোটানোর পর কিছুক্ষণ রেখে দিলে পানির বেশির ভাগ জীবাণু মরে যায়। এরপর দৃশ্যমান জীবাণুগুলো তলানিতে পড়ে যায়। তলানি ফেলে দিয়ে ওপরের পানি ব্যবহার করা যাবে। তবে প্রতিকূল পরিবেশ ও অন্যান্য কিছু কারণে সব জায়গার পানি ফোটানো সম্ভব হয় না। সেসব জায়গায় পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি ব্যবহার করা যেতে পারে।

পানিবাহিত রোগের চিকিৎসা: ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীকে খাওয়ার স্যালাইন, ভাতের মাড় বা অন্য বিশুদ্ধ পানীয় খাওয়ালে শরীরে লবণ-পানির ঘাটতি কমবে। শিশুর বুকের দুধ খাওয়া বন্ধ করবেন না।

খাবার সব সময় ঢেকে রাখতে হবে। তা না হলে খাবারে মশা-মাছি বসবে। এতে কলেরা ও ডায়রিয়া রোগের জীবাণু ছড়াতে পারে। পচা বা বাসি খাবার খাওয়া যাবে না। প্রতিদিন খাবারের আগে ও পায়খানা থেকে ফেরার পর সাবান দিয়ে দুই হাত ভালো করে ধুতে হবে। সাবান না থাকলে ছাই, মাটি বা প্রচুর পরিমাণ পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।

রাস্তা বা ফুটপাতের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। বাড়ির বাইরে বের হলে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি সঙ্গে নিতে হবে।

ডা. মো. শরীফুল ইসলাম

আবাসিক চিকিৎসক, বিএসএমএমইউ