পানি কমলেও বেড়েছে ত্রাণের জন্য হাহাকার

শেয়ার বিজ ডেস্ক: স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত দেশের ১১টি জেলা। এমন বিপর্যয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষ। বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির উদ্যোগে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। তবে সবচেয়ে বড় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে যাতায়াত ব্যবস্থা ও নৌযানের অভাব। এ কারণে ত্রাণ তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। চাহিদার বিপরীতে পর্যাপ্ত ত্রাণ পাচ্ছেন না বন্যাদুর্গতরা। নৌকা দেখলেই ত্রাণের আশায় ছুটে আসছেন বানভাসি মানুষ।
এদিকে বন্যায় ১১ জেলায় ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৫৯ জন মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়া বন্যায় এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৮ জন। গত শনিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান এ তথ্য জানিয়েছেন।
সচিব কামরুল হাসান বলেন, এখন পর্যন্ত বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা ১১টি। ?এসব জেলায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৫৯ জন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৫৪৮টি। এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৫২৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৮৮৮ জন আশ্রয় নিয়েছেন।
সচিব বলেন, এখন পর্যন্ত বন্যায় মোট ১৮ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে কুমিল্লায় চারজন, ফেনীতে একজন, চট্টগ্রামে পাঁচজন, নোয়াখালীতে তিনজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন এবং কক্সবাজারে তিনজন মারা গেছেন। বন্যাদুর্গত ১১ জেলায় মোট ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, ত্রাণের চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২০ হাজার ১৫০ টন। এছাড়া শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৫ হাজার পিস। শিশুর খাদ্য কেনার জন্য ৩৫ লাখ এবং গো-খাদ্য কেনার জন্য ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এদিকে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির শুক্রবার থেকে উন্নতি শুরু হয়েছে। বিগত ২৪ ঘণ্টায় পূর্বাঞ্চলীয় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকাগুলোতে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হয়নি এবং উজানের নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস অব্যাহত আছে।
এদিকে আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদীগুলোর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকতে পারে। এতে আরও বলা হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে, উত্তরাঞ্চলের তিস্তা-ধরলা-দুধকুমার নদীগুলোর পানি সমতল সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।
অন্যদিকে অনেক স্থানে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র তলিয়ে যাওয়ায় বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানে বিদ্যুৎহীন রয়েছেন ৯ লাখেরও বেশি গ্রাহক। গতকাল শনিবার এক বার্তায় এ তথ্য জানায় বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। বন্যাকবলিত এলাকার মধ্যে চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এলাকার মোট গ্রাহকের সংখ্যা ৪৯ লাখ ৭১ হাজার ৩২১ জন। এর মধ্যে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছেন ৯ লাখ ২৪ হাজার ২৬৬ জন গ্রাহক। এসব এলাকার ১৬৩টি উপকেন্দ্রের মধ্যে ১৭টি এবং ৯০৫টি ১১ কেভি ফিডারের মধ্যে ১৬০টি ফিডার বন্ধ রয়েছে।
প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: কমতে শুরু করেছে হাওড়া নদীর পানি। ফলে উন্নতি হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বন্যা পরিস্থিতি। গত ২৪ ঘণ্টায় হাওড়া নদীর পানি আরও ৮ সেন্টিমিটার কমেছে। এছাড়া সালদা নদীর পানি কমতে থাকায় উন্নতি হয়েছে কসবার বন্যা পরিস্থিতি। তবে বন্যার পানিতে বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও বাধ ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে এখনও বেশ কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্ধ রয়েছে আখাউড়া স্থলবন্দর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে গত বুধবার আখাউড়ায় বন্যা হয়। এতে উপজেলার বঙ্গেরচর, কালিকাপুর, বাউতলা, আড়িয়ল ও খলাপাড়াসহ ৪০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার বন্যার পানি বেড়ে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। তবে ঢলের পানির বেগ কমায় এবং বৃষ্টি না হওয়ায় কমতে থাকে পানি। শনিবার সকাল থেকে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়। এরই মধ্যে বেশির ভাগ বাসাবাড়ি থেকে পানি সরে গেছে। তবে বন্যার কারণে আড়িয়ল ও খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর দুটি বাঁধসহ অন্তত ৮টি স্থানে সড়ক ধসে পড়ে। এতে ওইসব সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া পানি সরে গেলেও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এখনো বন্ধ রয়েছে আখাউড়া স্থলবন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম। পাশাপাশি আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়েও যাত্রী পারাপার বন্ধ রয়েছে।
এদিকে কসবা উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে। তবে পানিতে প্লাবিত হয়েছে ২৬টি গ্রাম। এসব গ্রামে জলাবদ্ধতা রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর আহমেদ জানান, বর্তমানে আখাউড়া ও কসবা উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। হাওড়া নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। হাওড়া নদীর গঙ্গাসাগর পয়েন্টে পানির সমতল রয়েছে ৫ দশমিক ৫১ মিটার।
এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি জানান, আখাউড়ার বন্যা পরিস্থিতি ক্রমে উন্নতি হচ্ছে। দ্রুত ভেঙে যাওয়া বাঁধ ও সড়ক মেরামত করে যান চলাচল এবং স্থলবন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক করা হবে।
চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় প্লাবিত নিম্নাঞ্চলের পানি নেমে গেছে। উপজেলার মূল সড়কসহ ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার অভ্যন্তরীণ অন্তত ২০টি সড়ক অচল হয়ে গেছে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে পানি নামতে শুরু করেছে বলে জানান বাসিন্দারা।
বন্যায় ডুবে যাওয়া পুকুর থেকে মাছ ভেসে গেছে। সবজিক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। উপজেলার কয়েকটি জায়গায় পানি নেমে গেলেও শস্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত গুমাই বিলের রোপা আমন ধানক্ষেত পানির নিচে। আরও কয়েক দিন পানি থাকলে আমন চারা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাবুল কান্তি চাকমা বলেন, প্রাথমিকভাবে কয়েকটি ইউনিয়নের ৪০টি কাঁচা বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ৭০ পরিবারকে দুই টন চাল, শুকনা খাবার ও খাবার স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। পুরো উপজেলা ও পৌর এলাকার ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করতে একটু সময় লাগবে।
উপজেলা প্রকৌশলী দিদারুল আলম বলেন, উপজেলার একটি মূল সড়কসহ অভ্যন্তরীণ অন্তত ১৫টি সড়ক ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে বালুর বস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচলের উপযোগী করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, দেশের শস্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত গুমাই বিলের ৩ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমির রোপা আমন পানিতে ডুবে গেছে। তবে এবার বেশির ভাগই বন্যা সহনশীল জাতের চারা লাগানো হয়েছে। এক সপ্তাহের বেশি পানি থাকলেও এসব চারার কোনো ক্ষতি হবে না। বিল থেকে পানি যাতে দ্রুত নেমে যায়, সে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু পরিবারকে শুকনা খাবারের পাশাপাশি চাল দিয়েছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা দিলে এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া কোনো ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে এসব ঘর মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।’
খাগড়াছড়ি : দুই দিন ধরে বৃষ্টি বন্ধ থাকায় খাগড়াছড়ির চেঙ্গী, ফেনী নদীর পানি স্বাভাবিক হয়ে আসছে, কমছে মাইনী নদীর পানি। তবে খাগড়াছড়ির মেরং ইউনিয়নে কয়েকশ’ পরিবার এখনও পানিবন্দি হয়ে আছে। গতকাল শনিবার দুপুরে জেলার দীঘিনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের সোবাহানপুর, হাজাছড়া, ২ নম্বর কলোনি, ৩ নম্বর কলোনি, বড় মেরুং, ছোট মেরং বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে পানিবন্দিদের এমন চিত্র।
দীঘিনালা লংগদু সড়কের বড় মেরুং স্টিলব্রিজ এলাকায় পানিতে সড়ক তলিয়ে আছে। সড়কে বন্ধ আছে যান চলাচল। তবে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা।
হাজাছড়া এলাকার বাসিন্দা মো. দুলু জানান, টানা চার দিন ধরে তার ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে আছে। পরিবার নিয়ে তিনি আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। সরকারি সংস্থাসহ বিভিন্ন সংগঠন ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে। তবে সেখানে বিশুদ্ধ খাবার পানির চরম সংকট।
খাগড়াছড়ি জেলায় অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে এবারের বন্যা। অধিকাংশ এলাকার পানি নেমে গেছে। বেরিয়ে আসছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন।
বিশেষ করে বন্যায় গ্রামীণ সড়কগুলোর সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক সেতুর অ্যাপ্রোচ ভেঙে যাওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। কেবল সড়ক অবকাঠামোই না, ফসলি জমি ও মৎস্য পুকুর ভেসে যাওয়ায় অনেকেই চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
জেলায় মোট ৯ হাজার ৭০০ ফসলি জমি কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। এর মধ্যে ৮ হাজার ৫০০ হেক্টর আমন ও ৬৩০ হেক্টর আউশ ধানের ফসলও ছিল। সড়ক থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় খাগড়াছড়ির সঙ্গে বাঘাইছড়ি-সাজেক সড়ক যোগাযোগ পুনরায় চালু হয়েছে। এছাড়া জেলার রামগড় উপজেলার নাকাপা এলাকায় পাহাড় ধসের মাটি সড়ক থেকে সরানোর পর খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কে আবারও যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
নোয়াখালী : নোয়াখালীতে ঝলমলে রোদ উঠেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়নি এবং আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও ভারী বৃষ্টিপাতের আভাস নেই। এতে নোয়াখালীর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গতকাল শনিবার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালী সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহর ও আশপাশের উপজেলায় তিন থেকে চার ইঞ্চি পানি কমেছে। এছাড়াও নদীর সঙ্গে সংযুক্ত রেগুলেটর দিয়ে তীব্র গতিতে নামছে পানি।
জানা গেছে, দ্বিতীয় দিনের মতো আজ দেখা মিলেছে সূর্যের। এতে বানভাসি মানুষের মাঝে স্বস্তি বিরাজ করছে। এর আগে ভারী বর্ষণ ও ফেনী নদীর পানিতে নোয়াখালীর ৮ উপজেলার ৮৭ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েন অন্তত ২০ লাখ মানুষ। ৫০২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেন লক্ষাধিক মানুষ।
কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা বলেন, প্রায় তিন থেকে চার ইঞ্চি পানি নেমেছে। বর্তমানে তীব্র রোদ গায়ে লাগছে। পানি কমতে শুরু করায় আতঙ্ক কমে মানুষের মাঝে স্বস্তি বিরাজ করছে। আমাদের রেগুলেটর দিয়ে তীব্র গতিতে পানি নামছে।
সেনবাগ উপজেলার নলুয়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, পানি স্বাভাবিকভাবে নামছে। এখনও পানি আছে। মানুষজনের এই মুহূর্তে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় মাত্র চার মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আকাশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় দ্রুতই বন্যা পরিস্থিতি কেটে যাবে বলে আমরা আশা করছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সী আমির ফয়সাল বলেন, সাগরে ভাটা থাকায় আমাদের রেগুলেটর দিয়ে তীব্র গতিতে পানি নামছে। জেলা শহর ও আশপাশের উপজেলায় তিন থেকে চার ইঞ্চি পানি কমেছে। এভাবে কমতে থাকলে তিন থেকে চার দিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০