পান্থপথ সড়কে হাসপাতালের অবৈধ গাড়ি পার্কিং

নজরুল ইসলাম: রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে ধানমন্ডি-৩২ নম্বর সড়কে যানজট প্রতিদিনের চিত্র। পান্থপথ মোড় থেকে গ্রিন রোডের দৃশ্যও একই। যানজটের কারণ হিসেবে হাসপাতালগুলোর সামনে গাড়ি পার্কিংকে দায়ী করেছেন পথচারীরা। ভবনগুলোয় পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকার পরও রাস্তা দখল করে রাখা হয়। এছাড়া ধানমন্ডি-৩২ থেকে উল্টোপথ ধরে আসা গাড়িও যানজটের আরেকটি কারণ। আর ফুটপাত ঘেঁষে দোকানপাট তো রয়েছেই।

হাসপাতালগুলোর ভেতরে রোগী নামানোর মতো জায়গা নেই বললেই চলে। তাই রোগী নিয়ে আসা অ্যাম্বুলেন্স সড়কেই থামে। তখনই যানজট সৃষ্টি হয়। এছাড়া হাসপাতালের সামনে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সারি দেখা যায়। যাত্রীর জন্য তারা অপেক্ষায় থাকে। সেখানে হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেন না তারা। এ অটোরিকশার কারণে যানজটের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।

ভবনে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকার পরও হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের সামনের রাস্তার ওপর চার-পাঁচটি গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিনিয়র ম্যানেজার মোহাম্মদ মাহমুদ হোসেন শেয়ার বিজকে বলেন, ‘কমপক্ষে ৩০টি গাড়ি রাখার মতো জায়গা দরকার। কিন্তু আমাদের এখানে মাত্র ১১টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। সেজন্য আমরা অনেক সময় বিআরবি হাসপাতালের পার্কিং ব্যবহার করি।’

রাস্তায় গাড়ি রাখতে নিষেধ করা হয় বলে তিনি দাবি করেন। তাদের নিরাপত্তাকর্মীরা রাস্তা থেকে গাড়ি সরিয়ে দেন। কিন্তু এ প্রতিবেদক সরেজমিনে এ কথার প্রমাণ পাননি। হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে প্রবেশের সময় নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে রাস্তায় গাড়ি রাখার বিষয়ে জানতে চান এ প্রতিবেদক। তখন চারটি ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তার ওপর দাঁড় করানো ছিল। সিনিয়র ম্যানেজার মোহাম্মদ মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা শেষে করে যখন এ প্রতিবেদক ভবনের নিচে নামেন। তখনও ওই গাড়িগুলো হাসপাতালের সামনের রাস্তায় পার্কিং করা ছিল।

এ প্রসঙ্গে জানতে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. এম এইচ চৌধুরী লেলিনের মোবাইল নম্বরে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

শমরিতা হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) নুরুল ইসলাম তুহিন শেয়ার বিজকে বলেন, ‘আমাদের ৫০টি গাড়ি রাখার মতো জায়গা দরকার। কিন্তু এখানে ৩০টি রাখার মতো ব্যবস্থা রয়েছে। অনেক আগের বিল্ডিং। সে কারণে এ অসুবিধা। আমরা আরেকটি ভবনে পার্কিংয়ের জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

হাসপাতালের সামনে রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। এতে যানজট সৃষ্টি হওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তো নিষেধ করি। কিন্তু তারপরও কেউ কেউ রাখেন।’

শমরিতা হাসপাতালের পার্কিংয়ে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ একটাই। এতেও পার্কিংয়ে এসে ভোগান্তি পোহাতে হয় রোগীর স্বজন ও চিকিৎসকসহ অন্যদের। বিআরবি হাসপাতালের সামনের রাস্তায়ও একই চিত্র। সিএনজি অটোরিকশাসহ ব্যক্তিগত গাড়ি পার্কিং করা হয় এখানে।

বিআরবি হাসপাতালের ডিরেক্টর মেডিকেল সার্ভিস ও সিইও (অতিরিক্ত) মনসুর আলী শেয়ার বিজকে বলেন, ‘আমাদের পার্কিংয়ের ব্যবস্থা যথেষ্ট। অন্যদের জন্য আমরা মডেল। অন্য কারও পার্কিংয়ের জন্য এত স্পেস নেই, যা আমাদের আছে।’

তার পরও হাসপাতালের সামনের রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তো নিষেধ করি। মানুষ শোনে না। আমাদের কাছে ভোক্তার অধিকার আগে। তাদের গাড়ি রাখার জন্য পার্কিংয়ে যথেষ্ট জায়গা রাখা হয়েছে। আমরা আমাদের নিজেদের গাড়ি অন্য পার্কিং এরিয়ায় রাখি। আমাদের মোট তিনটি পার্কিং এরিয়া।’

ধানমন্ডি জেনারেল অ্যান্ড কিডনি হাসপাতাল ভবনের সামনের রাস্তায়ও গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। নিরাপত্তাকর্মীরা কোনো মন্তব্য করেননি।

জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ট্রাফিক, রমনা বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-ধানমন্ডি জোন) জাহিদ আহসান শেয়ার বিজকে বলেন, ‘মানবিক কারণে হাসপাতালের সামনে পার্কিং অ্যালাউ করা হয়। রোগী নিয়ে আসা অ্যাম্বুলেন্সসহ রোগীর স্বজনদের বহনকারী গাড়ির সিঙ্গেল লাইন পার্কিং কখনও কখনও অ্যালাউ করা হয়। তবে ডাবল লাইন পার্কিং অ্যালাউ করা হয় না। এছাড়া আমরা প্রতিনিয়ত ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। তারপরও কেউ কেউ আইন অমান্য করেন।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০