Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 3:17 am

পারফিউম তৈরিতে শিশুদের ব্যবহার করছে ল্যানকম ও এরিন

শেয়ার বিজ ডেস্ক: দুটি বৈশ্বিক পারফিউম ব্র্যান্ডের পণ্যের উপাদান সংগ্রহে শিশু শ্রমিকদের ব্যবহার করা হচ্ছে। বিবিসির অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত গ্রীষ্মে পারফিউম সরবারহ চেইন ল্যানকম ও এরিন বিউটির পারফিউম তৈরির উপাদান হিসেবে জেসমিন ফুল সংগ্রহের জন্য সরবরাহকারীরা শিশুদের নিযুক্ত করেছে।

এ বিষয়ে দুটি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা দাবি করেছে, শিশু শ্রমের ক্ষেত্রে তারা ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে থাকে।

ল্যানকমের মালিক লরিয়াল বলেছে, তারা সবসময় মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। অন্যদিকে এরিন বিউটির মালিক এস্টে লাউডার বলেছে, তারা বিষয়টি নিয়ে সরবরাহকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

ল্যানকম কোম্পানির আইডল লোইনটেনসিতে এবং এরিন বিউটির জন্য ইকত জেসমিন ও লিমোন ডি সিসিলিয়া নামের পারফিউমে মূল সুগন্ধি উপাদান হিসেবে ব্যবহƒত জেসমিন ফুল মূলত মিনমর থেকে আসে। দেশটি বিশ্বের জেসমিন ফুলের প্রায় অর্ধেক সরবরাহ করে।

পারফিউম শিল্পে যুক্ত ব্যক্তিরা বিবিসিকে জানিয়েছে, অনেক দামি পারফিউম ব্র্যান্ডের বাজেট কমিয়ে আনা হয়েছে। ফলে কর্মীরা কম বেতন পাচ্ছেন। মিসরের কর্মীরা বলছেন, এভাবে ব্যয় সংকোচন তাদের সন্তানদের এ কাজে জড়াতে বাধ্য করছে।

এধরনের পারফিউম ইন্ডাস্ট্রির সরবারহ পর্যবেক্ষণে চেইনগুলোর অডিটিং প্রক্রিয়াগুলো ত্রুটিযুক্ত বলে বিবিসির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

জাতিসংঘের স্পেশাল প্রতিনিধি তোমোয়া ওবোকাটা বলেছেন, তিনি গত বছরের বাছাই মৌসুমে ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের গোপন ভিডিওতে মিসরের জেসমিন বাগানের চিত্র দেখে মর্মাহত হয়েছেন। তিনি বলেন, কাগজে-কলমে তারা সরবরাহ চেইনের স্বচ্ছতা ও শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মতো অনেক ভালো জিনিসের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। তবে প্রকাশিত ফুটেজটি দেখলে বোঝা যায়, আসলে তারা প্রতিশ্রুতি মোতাবেক কোনো কাজ করছে না।

মিসরে জেসমিন ফুলের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ঘারবিয়া জেলার একটি গ্রামে বাস করেন হেবা। রাত ৩টায় ফুল বাছাই ও সংগ্রহের জন্য তিনি তার পরিবারকে জাগিয়ে তোলেন। সূর্য ওঠার আগে তার কাজ শুরু হয়। হেবা বলেছেন, এ কাজে সাহায্য করার জন্য তার চার সন্তানের প্রয়োজন হয়, যাদের বয়স পাঁচ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে। মিসরের বেশিরভাগ জেসমিন বাছাইকারীদের মতো তিনি একজন ‘স্বাধীন বাছাইকারী’ হিসেবে পরিচিত এবং একটি ছোট খামারে কাজ করেন।  তিনি ও তার সন্তানরা যত বেশি ফুল বাছাই করতে পারে তত বেশি তারা উপার্জন করেন।