মানবজীবন খুবই সংক্ষিপ্ত। যেন দূর্বা ঘাসের ডগায় জমে থাকা এক ফোঁটা শিশির বিন্দুর মতো এক মহা অনিশ্চয়তায় দোদুল্যমান। ছোট এই জীবনকে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে পারস্পারিক ক্ষমা ও বিনয় গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষমা মানুষের মহত্ত্বের লক্ষণ। ব্যক্তিগত ও সামাজিক বহু ক্ষেত্রে ক্ষমা ও সহিষ্ণুতার পথ অবলম্বন করলে পরিবার ও সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকে। সম্পর্ক আরও মজবুত হয়। ক্ষমা করার মাধ্যমে আল্লাহর ক্ষমা ও ভালোবাসা পাওয়া যায়। আল্লাহ বলেন, ‘যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল সব অবস্থায় ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর এ ধরনের সৎকর্মশীলদের আল্লাহ অত্যন্ত ভালোবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান আয়াত: ১৩৪)
মানুষ মাত্রই ভুল করে থাকে, কেউ ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। তাই কারও ভুলত্রুটি পই পই করে বা কড়ায়-গণ্ডায় হিসাব না করে তার প্রতি ক্ষমাশীল হতে ইসলাম উৎসাহিত করে। এমনকি বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ক্ষমা করে এবং বিনয় ও নম্র আচার-আচরণ প্রদর্শন করে মানসিকভাবে তারা তুলনামূলক বেশি স্বস্তি অনুভব করে। বর্তমান সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে হিংসা-বিদ্বেষের আগুন ছড়িয়ে আছে। যার ফলে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা নেই। মানুষের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও অশান্তি বিরাজ করেছে। অতীতে কারও সঙ্গে আমার তিক্ত সম্পর্ক থাকতে পারে কিন্তু প্রতিশোধ গ্রহণের ক্ষমতা ও সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আমি যদি তাকে ক্ষমা করে দিই, তার প্রতি বিনয় প্রদর্শন করি; তবেই আমি প্রকৃত ক্ষমাশীল। রাগ, ক্ষোভ, হিংসা মানুষের বড় শত্রু। যে কোনো সময় ধ্বংস করে দিতে পারে আমাদের সম্মান, জীবন, সম্পদ, পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক। জীবনে নেমে আসতে পারে কঠিন বিপর্যয়। তাই আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার জন্য। পারিবারিক ও সামাজিক শান্তি, পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির জন্য আমাদের ক্ষমাশীল ও বিনয়ী হতে হবে। কাউকে ক্ষমা করার পর সে যদি শুধরে যায়, তার মধ্যে যদি ইতিবাচক পরিবর্তন আসে; তাহলে তাকে ক্ষমা করে দেয়াই উত্তম।
লুৎফর রহমান নাঈম
কিশোরগঞ্জ