পাসের হার বাড়িয়ে শিক্ষার অবনতি ঘটানো হয়েছে: খালেদা জিয়া

শেয়ার বিজ ডেস্ক: আত্মতুষ্টির জন্য পাসের হার বাড়িয়ে আমাদের শিক্ষার মানের ক্রমাবনতি ঘটানো হয়েছে। এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে না পারলে আগামী দিনে আমাদের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে এবং আমরা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ব। এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। খবর বিডিনিউজ।

রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে গতকাল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা ও আমাদের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে সরকারের সমালোচনা করে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, সরকার শিক্ষার মৌলিক লক্ষ্যকেও পদদলিত করেছে।

সকাল থেকে চার পর্বের সেমিনারে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা, শিক্ষার বিভিন্ন ধারা, উচ্চ ও অগ্রসর শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার ওপর আলোচনা হয়। এসব পর্বে বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষাবিদরা অংশ নেন।

সকালে সেমিনারের উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ। সমাপনী অধিবেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আখতার হোসেন খান সেমিনারের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন।

মানবসম্পদ উন্নয়নের ওপর জোর দিয়ে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জনসংখ্যার বয়সভিত্তিক কাঠামো যেভাবে বদলে যাচ্ছে, তা মোকাবেলায় মূল কৌশল হবে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি করা এবং আকর্ষণীয় চাকরির বাজার সৃষ্টি করা। শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রয়োজনীয় সেতুবন্ধন রচনা করা।’

শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারের কার্যক্রমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষা মানুষকে গণতন্ত্রের প্রতি, ভিন্নমতের প্রতি, ভিন্নমত প্রকাশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শিক্ষা দেয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার শিক্ষার এ মৌলিক লক্ষ্যকে পদদলিত করেছে। বিরোধী মতের লোকজনকে নিষ্ঠুরভাবে দমন করছে। মোদ্দা কথা, শিক্ষার সব উদ্দেশ্য আজ ভূলুণ্ঠিত।

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে হলে প্রশিক্ষণ ও সংগঠনের মাধ্যমে জনশক্তিতে পরিণত করলে এটা একটা পাওয়ার হবে, একটা ইকোনমিক প্রডাক্ট হিসেবে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। প্রেসিডেন্ট জিয়ার এ চিন্তাকে মাথায় রেখে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন শিক্ষাকে ঢেলে সাজিয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে অনেক কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি।

খালেদা জিয়া আরও বলেন, ‘জনইচ্ছার প্রতিফলনে আগামী দিনে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি শিক্ষাব্যবস্থাকে জনকল্যাণমুখী করবে। শুধু ডিগ্রি প্রাপ্তির মোহ থেকে দেশের তরুণদের মুক্ত করতে হবে। সামর্থ্য, মেধা ও চিন্তার জগতে পরিবর্তন আনতে হবে। শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থানের নিশ্চিত ব্যবস্থা আমরা করতে চাই। পেশাগত ও কারিগরি শিক্ষা, প্রকৌশলবিদ্যা, চিকিৎসাবিদ্যা, বিজ্ঞান শিক্ষা ও বিজ্ঞানের মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণা, শত শত ধরনের ট্রেড ও পেশার জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি মানবসম্পদকে বিকশিত করতে পারে।’

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও হেলেন জেরিন খানের পরিচালনায় সমাপনী অধিবেশনে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ শিক্ষা দর্শনবিষয়ক প্রবন্ধ পাঠ করেন।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মধ্যে আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, নুরুল আমিন, খলিলুর রহমান, লুৎফর রহমান খান, তাজমেরী এসএ ইসলাম, জাহিদুল ইসলাম, সুকোমল বড়ুয়া, আবদুল লতিফ মাসুম, এম এনামুল্লাহ (পারভেজ), ছিদ্দিকুর রহমান খান, মাহমুদুল হাসান, খসরুল আলম, নজরুল ইসলাম, নাজমুস সালাত, মামুন আহমেদ, এমতাজ হোসেন, মোরশেদ হাসান খান, মোহাম্মদ ইকবাল, সিরাজুল ইসলাম, শাহ শামীম আহমেদ। এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অংশ নেন।

বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑখন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, সেলিমা রহমান, আবদুল মান্নান, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, শওকত মাহমুদ, ইসমাইল জবিউল্লাহ, অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ প্রমুখ।

 

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০