নিজস্ব প্রতিবেদক: পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলাÑখাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটিতে ১৩০টি অবৈধ ইটভাটা ছয় সপ্তাহের মধ্যে গুঁড়িয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে সারাদেশে নিবন্ধনহীন ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে আগামী তিন দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন আদালত। গতকাল সোমবার এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রিট আবেদনের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ; রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
পার্বত্য তিন জেলায় বিভিন্ন ইটভাটা লাইসেন্স ছাড়াই কার্যক্রম চালাচ্ছে জানিয়ে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘ইটভাটায় কাঁচামাল হিসেবে পাহাড় কেটে মাটি ব্যবহারের পাশাপাশি বনের গাছ কেটে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, আদালত আদেশে খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটি এলাকার নিবন্ধনহীন ১৩০টি ইটভাটা ছয় সপ্তাহের মধ্যে অপসারণ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিন জেলা প্রশাসকের দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৩০টির মধ্যে রাঙামাটিতে ২৫, বান্দরবানে ৭০ এবং খাগড়াছড়িতে ৩৫ অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। এ ছাড়া আরেক আদেশে নিবন্ধনহীন ইটভাটার বিরুদ্ধে ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৩ এর ১৪ ও ১৯ ধারা অনুসরণ করে তিন দিনের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আদালত নির্দেশ দিয়েছেনÑবলেন মনজিল।
মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে তিন আইনজীবী মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, একলাছ উদ্দিন ভুইয়া ও রিপন বাড়ৈ হাইকোর্টে এ রিট আবেদন করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৫ জানুয়ারি হাইকোর্টের এ বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।
ওই আদেশে সাত দিনের মধ্যে তিন জেলার নিবন্ধনহীন সব ইটভাটা বন্ধ করা এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে অবৈধ ইটভাটার তালিকা আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় পার্বত্য তিন জেলার ডিসির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপক্ষ সোমবার ১৩০টি অবৈধ ইটভাটার তালিকা আদালতে দাখিল করে।
ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৩ এর ১৪ ধারায় বলা হয়েছেÑকোনো ব্যক্তি আইন লঙ্ঘন করে ইট প্রস্তুত বা ইটভাটা স্থাপন, পরিচালনা বা চালু রাখলে তার দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড হতে পারে। আইনের ১৯ ধারায় আরও বলা হয়, আইন ভঙ্গ করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক বিচারের মাধ্যমেও দোষীকে দণ্ড দেয়া যাবে।
