পায়ে লিখে বিসিএসে অংশ নেওয়ার স্বপ্ন

এসএসসি পাস করে টিউশনি শুরু করেন তিনি। সংসারের অভাব দূর করতে সেই থেকে স্বাবলম্বী হওয়ার উপায় খুঁজছেন তিন। আত্মবিশ্বাস ও মেধার সমন্বয়ে জীবন সংগ্রামে জয়ী হওয়ার চেষ্টা করছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী শারমিন আক্তার।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষ্ণরামপুর গ্রামের লাল মিয়া কেরানি বাড়ির অধিবাসী শারমিন। দিনমজুর বাবা ফিরোজ আলম ও মা বকুল আক্তারের সংসারের পাঁচ সন্তানের চতুর্থ শারমিন। জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী তিনি। দুই হাত থেকেও নেই। পুরোপুরি অকেজো। তাই দুই পায়ের ওপর ভর করে চলে তার সংগ্রাম। তিনি বলেন, কলেজে চলাফেরার জন্য দুই চাচাতো বোন তাকে সযোগিতা করেন।
একমাত্র ভাই রাশেদ খান রাজধানীর সায়েদাবাদে গাড়ি মেরামতের প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। বড় দুই বোনের বিয়ে হয়েছে। রাশেদ জানান, পরিবারের একমাত্র প্রতিবন্ধী বোনের চাকরি-বাকরির ব্যবস্থা হলে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলা যাবে।
নোয়াখালী সমাজসেবা অধিদফতর থেকে লেখাপড়ার খরচ হিসেবে কিছু আর্থিক সহযোগিতা পান শারমিন। নোয়াখালী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে দর্শন শাস্ত্রের অনার্স ফলপ্রার্থী তিনি। চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা শেষে কম্পিউটারের ওপর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, পরিবারের সবার অকৃত্রিম ভালোবাসা, সহযোগিতা ও সাহসের কারণে তিনি বিসিএসে অংশ নেওয়ার স্বপ্ন দেখেন।
শারমিন ডান পায়ের মধ্যে আঙ্গুল দিয়ে লেখেন। তার সহপাঠী প্রিয়া স্মরণি বলেন, হাত দিয়ে লিখতে পারলে তার লেখা মুক্তার মতো হতো। শারমিন জানান, রাজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে অংশ নিলেও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে মানবিকে ভর্তি হন। লেখার গতি দ্রুত হলে বিজ্ঞান বিভাগের ধারাবাহিকতা সহজে রক্ষা করা যেত বলে মনে করেন তিনি। স্মাতকোত্তর শেষে বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেবেন। তার মতে, প্রতিবন্ধিতা কোনো সমস্যা নয়, যদি তা জয় করা যায়।

আকাশ মো. জসিম

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০