পা ফোলা বা ইডিমা

পা ফোলা বা ইডিমা হলেই সাধারণের ধারণা, কিডনি রোগ হয়েছে। হার্ট ফেল করলে, বা লিভার সিরোসিস হলে পা ফুলতে পারে। বেশি মোটা মানুষেরও পা ফোলা থাকে। হরমোনের অসুখ হাইপোথাইরয়েডিজম হলে পা ফুলে যায়। প্রেশারের ওষুধ এমলোডিপিন বা সমগোত্রীয় ওষুধ, ব্যথার ওষুধ (এনএসআইড, করটিকস্টেরয়েড) সেবনেও পা ফুলে যায়। ফুললেই প্রস্রাবের ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা আছে অনেকের। এতে কিডনির ক্ষতি হয়। অসুখ না থাকলে তাই ক্ষতিকারক এ ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া যাবে না।

কিডনির রোগ: কিডনির ইনফেকশন আর পাথর ছাড়া অন্য দুটি সমস্যা হলো, গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস ও কিডনি ফেইলুর। শেষের দুটিতে পা ফুললেও প্রথম দুটিতে হয় না। ইনফেকশন হলে জ্বর আসবে; অন্যগুলোয় নয়। কিডনির ইনফেকশন (পাইলনেফ্রাইটিস), প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশনে (সিস্টাইটিসÑপ্রস্রাবের থলের ইনফেকশন ও ইরেথ্রাইটিস রাস্তার ইনফেকশন) অ্যান্টিবায়োটিক লাগে; অন্যগুলোয় নয়। শিশুদের গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস চিকিৎসায় সেরে যায়; বড়দের বেলায় এটা জটিল। কিডনির বায়োপসি করা লাগে।

রেনাল (কিডনি) ফেইলুর: চিকিৎসাযোগ্য কারণে ফেইলুর নিরাময়যোগ্য। অন্যথায় ক্রনিক কিডনি ফেইলুরে চিকিৎসা চলে অনেক দিন। ফেইলুর অর্থ, সবকিছু শেষ নয়। কিডনি অকেজো হওয়ার পাঁচটি স্তর (স্টেজ) আছে। স্টেজ-৪ হলে ওষুধ ও খাদ্য খাওয়া সবই পরিমিত বা অভিশ্রুত করতে হবে। একপর্যায়ে ডাল ও দুধ না খাওয়া ভালো। সবজি সিদ্ধ করার পর পানি ফেলে দিয়ে রান্না করতে হবে। ২৪ ঘণ্টার পানি হিসাব করে পান করতে হবে। ডায়াবেটিস হলে সুগার খেতে মানা করা হয়; আর কিডনির অসুখ হলে প্রোটিন খেতে মানা করা হয়। তাই প্রোটিন না খেয়ে ক্যালরির জন্য ভাত খাওয়া যেতে পারে। পঞ্চম স্তরকে বলে শেষ স্তর। তখন কিডনি কাজ করে না বলে ডায়ালাইসিস লাগে। ডায়ালাইসিস নয়, কিডনি প্রতিস্থাপনই (কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট) আসল চিকিৎসা: প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ডায়ালাইসিস চালিয়ে যাওয়া যায়। রক্তের ক্রিয়েটিনিন ও ইজিএফআর দেখে কিডনির দুর্বলতার স্তর বোঝা যায়। ক্রিয়েটিনিন ৬-এর বেশি হলে এবং ইজিএফআর ২০-এর নিচে যেতে থাকলে ডায়ালাইসিসের কথা ভাবতে হবে। প্রস্তুতি হিসেবে ফিস্টুলা করতে হবে।

ডা. খাজা নাজিম উদ্দীন

সাবেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক (মেডিসিন বিভাগ), বারডেম

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০