Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 5:55 pm

পিআরপি থেরাপি কী

ইদানীং পিআরপি চিকিৎসার কথা অনেক শোনা যায়। এই পিআরপি কী, আর কেনই-বা ব্যবহার করা হয়? পিআরপি হলো প্লাটিলেট (অণুচক্রিকা) রিচ প্লাজমা, যা রক্তের বিশেষ প্রক্রিয়াজাত অংশবিশেষ। বলা হয়, এতে যেসব উপাদান থাকে, তা নতুন কোষ তৈরির পাশাপাশি পুরোনো কোষগুলোকে উজ্জীবিত করে এবং এরই ভিত্তিতে ত্বক, চুল, অস্থিসন্ধি, মাংসপেশির আঘাত, টেন্ডনের আঘাত ও পুরোনো ক্ষতের চিকিৎসায় উপকার পাওয়া যায়। পিআরপি থেরাপির ফলাফল: ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে পিআরপি থেরাপি ব্যবহার করা যায়। যেমন ব্রণের দ্বারা সৃষ্ট ক্ষত, লোমকূপ বড় হয়ে যাওয়া, চোখের নিচের কালো দাগ, অল্প বয়সে ত্বক বুড়িয়ে যাওয়া, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানো প্রভৃতি। সাধারণ চুল পড়া, জায়গায় জায়গায় চুল পড়া এবং বংশগত চুল পড়ার ক্ষেত্রেও এটি উপকারে আসে। পিআরপি দেয়ার আগে নির্দিষ্ট স্থান বিশেষ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা হয়। এরপর জায়গাটি স্থানীয়ভাবে অবশকারী ক্রিম বা ইনজেকশন দিয়ে সাময়িকভাবে অবশ করা হয়, যা ৩০-৪০ মিনিট কার্যকর থাকে। রোগীর কনুইয়ের ভাঁজের রক্তনালি থেকে ২০ মিলি রক্ত নিয়ে একটি বিশেষায়িত মেশিনে দিয়ে ১০ থেকে ১২ মিনিট উচ্চ মাত্রায় ঘোরানো হয়। এতে টেস্টটিউবের ভেতর তিনটি সুনির্দিষ্ট স্তর তৈরি হয়। এর মধ্যে ওপরের হলুদ অংশটি খুবই সতর্কতার সঙ্গে ইনসুলিন সিরিঞ্জে তোলা হয়, এটিই পিআরপি। পিআরপি নির্দিষ্ট স্থানে ইনসুলিন সিরিঞ্জের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়। পিআরপি নেয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে রোগী বাসায় যেতে পারে এবং স্বাভাবিক সব ধরনের কাজকর্ম করতে পারে। সাধারণত প্রতি মাসে একবার করে আট থেকে ১২ মাস ধরে থেরাপি দেয়া হয় এবং থেরাপি শুরুর তিন মাস পর থেকেই রোগী অবস্থার পরিবর্তন ও উন্নতি বুঝতে পারে। অনেক সময় থেরাপির পাশাপাশি ওষুধ খাওয়া ও ব্যবহারের জন্য দেয়া হয়। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে আছে ইনজেকশন প্রয়োগের স্থানে ব্যথা, মাথার ত্বকে সংক্রমণ, নার্ভ ড্যামেজ, চুলকানি প্রভৃতি। তবে এটি সাময়িক। থেরাপি নেয়ার পর ঠাণ্ডা বা অতিরিক্ত গরম সেক নেয়া যাবে না। অ্যালকোহল পান করা যাবে না। অণুচক্রিকার সংখ্যা কম, রক্তে ফিব্রিনোজেন কম, দীর্ঘমেয়াদি কোনো সংক্রমণের উপস্থিতি আছে, রক্তরোগ বা ক্যানসারের রোগী, দীর্ঘমেয়াদি লিভারের রোগী, অ্যান্টিকোয়াগুলেশন থেরাপিতে আছেন এমন রোগী পিআরপি নেবেন না।

ডা. জাহেদ পারভেজ

সহকারী অধ্যাপক, চর্মরোগ বিভাগ

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল