নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে অর্থ পাচার মামলায় অভিযুক্ত পিকে হালদারকে প্রক্রিয়া শেষ করে ফেরত দেয়ার পুনরায় আশ্বাস দিয়েছে ভারত। গতকাল দুই দেশের কনস্যুলার ডায়ালগে বিষয়টি উত্থাপিত হলে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়Ñতাদের প্রক্রিয়া শেষ করে হালদারকে ঢাকা ফেরত পাঠানো হবে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে সামস। ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওভারসিজ ইন্ডিয়ান অ্যাফেয়ার্সের সচিব আওসাফ সাইয়িদ। বৈঠকে উভয় দেশের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে পিকে হালদারের প্রত্যর্পণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভারতকে সরবরাহ করেছি। আশা করি, ভারত শিগগিরই তাকে ফেরত পাঠাবে।’ উল্লেখ্য, গত মে মাসে ভারতের পশ্বিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হন পিকে হালদার। বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলা রয়েছে।
আট হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী: বাংলাদেশে প্রায় আট হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী মেডিকেলসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে। তাদের ভিসা-সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়টি ভারতের পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হয়। এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, ওইসব শিক্ষার্থীর এক বছরের ভিসা দেয়া হয়। ফলে প্রতি বছর তাদের ভিসা পুনঃনবায়ন করতে হয়। ভারতীয়রা তাদের শিক্ষার পূর্ণ মেয়াদের ভিসা দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। বাংলাদেশে কর্মরত ভারতীয়দের ভিসাপ্রাপ্তি-সংক্রান্ত সমস্যা তুলে ধরা হয় বলে তিনি জানান।
পর্যটক ও মেডিকেল ভিসা: অনেক বাংলাদেশি পর্যটক ভিসা নিয়ে ভারতে চিকিৎসা করান এবং পরে ওই ভিসা ক্যাটেগরি পরিবর্তনজনিত অসুবিধার সম্মুখীন হন। এ বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভিসা ক্যাটেগরি পরিবর্তনের বিষয়টি উত্থাপন করা হলে ভারত নীতিগতভাবে রাজি হয়। একজন কর্মকর্তা বলেন, অনেক বাংলাদেশি এ সমস্যার সম্মুখীন হন। অনেক ক্ষেত্রে তাদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। তখন ভিসা পরিবর্তন করার প্রয়োজন পড়ে। এটি তাদের বলা হলে ভিসা পরিবর্তনের বিষয়টি তারা ইতিবাচকভাবে দেখবে বলে জানায়।
পোর্ট সীমাবদ্ধতা: বাংলাদেশি পর্যটকদের ভিসায় নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থলবন্দরের নাম উল্লেখ থাকে, যেখান দিয়ে তারা ভারতে প্রবেশ ও প্রস্থান করতে পারেন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এটি উম্মুক্ত করে দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে যেকোনো সীমান্ত দিয়ে ভারতীয়রা ঢুকতে এবং বের হতে পারেন। আমরাও এই সুবিধা চাই। বর্তমানে প্রতিটি প্রবেশ ও প্রস্থানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরীক্ষা ও রেকর্ড করা হয়। এই প্রেক্ষাপটে স্থলবন্দর নির্দিষ্ট করার কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে তিনি জানান।
বন্দিবিনিময়: তিনজন ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে জেলে রয়েছেন এবং তাদের বন্দিবিনিময়ের আওতায় ফেরত চেয়েছে দিল্লি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, মোট আটটি কেস ছিল এবং এর মধ্যে পাঁচজন ইতোমধ্যে ফেরত গেছেন। বাকি তিনজনের প্রক্রিয়া শেষ হলে তাদের ফেরত পাঠানো হবে।
কনস্যুলার ডায়ালগ কার্যক্রম ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং আগামী ডায়ালগ দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে।