নিজস্ব প্রতিবেদক : পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের ২০১৩-২১ সালের নিরীক্ষিত/অনিরীক্ষিত আর্থিক হিসাব বিশেষ নিরীক্ষক দিয়ে নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গতকাল মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) বিএসইসির ৮০০তম নিয়মিত কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
এছাড়াও আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পিপলস লিজিং চালু করতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার কথা জানিয়েছে বিএসইসি। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশে গত সোমবার পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের পর্ষদের সঙ্গে বিএসইসি এক বিশেষ বৈঠক করেছে। বৈঠকে বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে পিপলস লিজিংয়ের ২০১৩ থেকে ২০২১ সালের আর্থিক বিবরণীসহ অন্যান্য কার্যক্রমের ওপর বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করবে। সে সঙ্গে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এবং পিপলস লিজিংয়ের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সাথে আলোচনাসাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানটির পুনর্গঠনে বিভিন্ন দিক বিবেচনা করাসহ প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় চালুর বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বিএসইসি।
ডিএসইসির তথ্যমতে, ২০০৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানিটির বর্তমান শেয়ার সংখ্যা ২৮ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার ৫৯৭টি।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৮ জুন (সোমবার) আলোচনায় আসা আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডকে পুর্নগঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার জন্য একটি বোর্ডও গঠন করে দিয়েছেন আদালত। তবে বোর্ডে কারা থাকছেন, তা লিখিত আদেশে জানা যাবে।
জানা গেছে, ১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিপলস লিজিংকে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে মেয়াদি আমানত ও বিভিন্ন ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা ধার করে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠানটির আমানত ছিল দুই হাজার ৩৬ কোটি টাকা। আর ঋণের পরিমাণ ছিল এক হাজার ১৩১ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিই ৭৪৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ খেলাপি ঋণের হার ৬৬ শতাংশ।
২০১৫ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে লোকসান দেয় কোম্পানিটি। খেলাপি প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা আদায় করতে না পারায় আমানতকারীদের টাকাও ফেরত দিতে পারেনি তারা। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই পিপলস লিজিং অবসায়নের জন্য আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওইদিনই মামলার শুনানি শেষে অবসায়নের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন আদালত।
এছাড়া অবসায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক পদমর্যাদার একজনকে অবসায়ক নিয়োগ দিতে বলা হয়। পরে সাময়িক অবসায়ক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান খানকে নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।