Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 1:54 pm

পিলখানা ট্র্যাজেডি: ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড কারাদণ্ড ১৮২ জনের

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি) সদর দফতরে হত্যা মামলায় ডিএডি তৌহিদসহ ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। এর আগে ২০১৩ সালে এ মামলায় ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন নিম্ন আদালত।

গতকাল সোমবার বিকালে দেশের সবচেয়ে আলোচিত এ মামলায় ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে অনুমতি চেয়ে আবেদন) ও আপিলের রায় পড়া শুরু করেন বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিশেষ (বৃহত্তর) হাইকোর্ট বেঞ্চ। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার।

রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১৫২ জনের মধ্যে ১৩৯ জনের সাজা বহাল রাখা হয়। এ ছাড়া চারজনকে খালাস দেন উচ্চ আদালত। নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে একজন আসামি মারা যাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।

সোমবার দিনের প্রথম অংশে রায়ের পর্যবেক্ষণ দেন আদালত। সে সঙ্গে নিজেদের সাতটি সুপারিশ তুলে ধরেন। এরপর বিরতি শুরু হয়। বিকালে বিরতি শেষে আবার শুরু হয় আদালতের কার্যক্রম। এতে নিম্ন আদালতে দেওয়া রায়ের একটি অংশে ১৮২ জনকে দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়।

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ রাইফেলস সদস্যরা রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর সদর দফতরে বিডিআর থেকে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের কর্তৃত্বের অবসান, রেশন ও বেতনবৈষম্য দূর করাসহ বেশ কিছু দাবিতে সশস্ত্র বিদ্রোহ করেন। বিডিআরের প্রায় ১৫ হাজার সদস্য সম্মিলিতভাবে তাদের ঊর্ধ্বস্থানীয় ৫৭ কর্মকর্তাকে হত্যা ও কয়েকজনকে জিম্মি করেন। নিহতদের তালিকায় রয়েছেন তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ। সামরিক কর্মকর্তা ছাড়াও বিডিআরের গুলিতে কয়েকজন বেসামরিক নাগরিকও নিহত হন। সদর দফতরের ভেতর এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। তবে বিদ্রোহীরা ভেতরে আটকেপড়া শিশু ও মহিলাদের বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্রোহীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলে বিডিআর সদস্যদের একাংশ আত্মসমর্পণ করেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত বিডিআর ক্যাম্পে পুনরায় উত্তেজনার খবর পাওয়া যায়। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী জাতীর উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বিডিআরকে আবারও তাদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বিদ্রোহী বিডিআরের সব সদস্য তাদের অস্ত্র জমা দেন এবং বাংলাদেশ পুলিশ বিডিআর সদর দফতর তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।