পিসিওএস নিয়ে ভুল ধারণা

পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম বা পিসিওএস একটি হরমোনজনিত সমস্যা। প্রতি ১০ নারীর মধ্যে একজনের এ সমস্যা থাকে। এটি প্রতিরোধযোগ্য ও নিরাময়যোগ্য। তবে এ রোগ সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা রয়েছে।

পিসিওএসে আক্রান্ত বেশিরভাগ নারীর দেহে উচ্চমাত্রার আন্ড্রোজেন বা পুরুষ হরমোনের উপস্থিতি থাকে। এর প্রভাবে ডিম্বাশয়ের আশপাশে ছোট ছোট সিস্ট হয়। ফলে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু বের হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি হয় এবং একসময় ডিম্বাণু বের হওয়া বা স্ফুটন বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে নিয়মিত ঋতুচক্র বাধাগ্রস্ত হয়। সিস্ট ছাড়াও এ রোগের নানা উপসর্গ থাকতে পারে। আবার ডিম্বাশয়ে কোনো সিস্ট থাকা মানেই সেটা পিসিওএস রোগের লক্ষণ নয়।

যেহেতু পিসিওএস থাকলে নারীর শরীরে অ্যান্ড্রোজেনের ক্ষরণ বেশি হয়, তাই অনেকের ঠোঁটের ওপরে, পেটের চারপাশে এবং থুঁতনি বা বুকে অত্যধিক লোম থাকতে পারে। তবে সব নারীর একই লক্ষণ থাকে না। পিসিওএস থাকার পরও অনেকের শরীরের লোম স্বাভাবিক থাকে।

মানসিক চাপ, জরায়ুতে ফাইব্রয়েড, পেলভিসে প্রদাহ, থাইরয়েডের সমস্যা, খুব বেশি পরিমাণে ডায়েটিং বা ব্যায়াম, হরমোনের ভারসাম্যহীনতাসহ অনেক কারণে মেয়েদের ঋতুস্রাব অনিয়মিত হতে পারে। অনেক উপসর্গ ও সমস্যা মিলেই পিসিওএস হয়, যার মধ্যে অনিয়মিত মাসিক একটি কারণ।

বেশিরভাগ মেয়ের ক্ষেত্রে এ রোগ থাকলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স এত বেশি থাকে যে, ওজন হ্রাস মুশকিল হয়ে পড়ে। খুব দ্রুত তাদের ওজন বেড়েও যায়। পিসিওএস স্থূল মেয়েদের বেশি হয় বটে; কিন্তু এমন অনেকে রয়েছেন, যাদের এ রোগ থাকার পরও ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। পিসিওএসের সফল চিকিৎসা আছে। নিয়মিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকলে স্বাভাবিক নিয়মেই অন্তঃসত্ত্বা হওয়া যায়। এ ছাড়া নানা রকম ফার্টিলিটি চিকিৎসার সুবিধা রয়েছে।

উপসর্গ একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে। তাই জীবনধারায় কী ধরনের বদল আনলে আপনি উপকৃত হবেন, তা চিকিৎসক বলে দেবেন। জীবনযাপনভিত্তিক ব্যবস্থাপনা পিসিওএস চিকিৎসার কেন্দ্রে অবস্থান করছে। এর সঙ্গে মাসিক নিয়মিতকরণ, অ্যান্ড্রোজেন হরমোন হ্রাস প্রভৃতি চিকিৎসা চলে। এজন্য হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হতে হবে।

ডা. শাহজাদা সেলিম

সহযোগী অধ্যাপক

অ্যান্ড্রোক্রাইনোলজি ও মেটাবলিজম বিভাগ,  বিএসএমএমইউ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০