পুঁজিবাজারে ই-সরকারি বন্ড লেনদেন শুরু নভেম্বরে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ঘাটতি অর্থ সংগ্রহের অন্যতম মাধ্যম হবে পুঁজিবাজার। উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বন্ড ছেড়ে পুঁজিবাজার থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ হবে সরকার। এছাড়া বিপুলসংখ্যক বিনিয়োগকারী ইক্যুইটিনির্ভর বাজার বিনিয়োগের জন্য পছন্দ করেন না। তাদের নিরাপদ বিনিয়োগের জন্য বন্ড হবে আকর্ষণীয়। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) পরীক্ষামূলক ট্রেজারি বন্ড লেনদেনের শুরুতে অতিথিরা এসব কথা বলেন। গতকাল সকালে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের হল রুমে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দেশের শেয়ারবাজারে পাইলটিংয়ের আওতায় বিভিন্ন মেয়াদি চারটি সরকারি সিকিউরিটিজের (ট্রেজারি বন্ড) লেনদেন শুরু হয়েছে। এটি আমাদের শেয়ারবাজারের জন্য মাইলফলক। কারণ আমাদের প্রচুর সরকারি বন্ড রয়েছে। তবে তা কিছু মানুষের কাছে মজুত রয়েছে। তাই সাধারণ মানুষ যাতে লেনদেন করতে পারে, সে লক্ষ্যে শেয়ারবাজারে সরকারি সিকিউরিটিজ চালু করা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

এ সময়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে ছিলেন সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম। এছাড়া অনুষ্ঠানে অর্থ মন্ত্রণালয়, বিএসইসি, সিএসই, সিডিবিএল, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস, মার্চেন্ট ব্যাংক এবং অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রতিনিধি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, শেয়ারবাজারকে আরও বৈচিত্র্যময় করতে এবং পরিধি ও গভীরতা বাড়াতে শেয়ারবাজারে সরকারি সিকিউরিটিজের লেনদেন চালু করা দরকার ছিল। সিকিউরিটিজ ও বন্ডের জন্য দেশে একটি দ্বিতীয় বাজারের চাহিদা অর্থনীতির সবসময়ই ছিল। সুতরাং বিষয়টিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য শেয়ারবাজারে সরকারি সিকিউরিটিজের লেনদেন আমরা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করতে পারব। এজন্য লেনদেন পুরোপুরিভাবে চালু করার আগে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। সব স্টেকহোল্ডাররা যাতে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমানে আমানতের সুদের হার তলানিতে। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগসীমার অতিরিক্ত টাকা বিনিয়োগের জন্য এখন অনেকেই বন্ডে ঝুঁকছেন। কিন্তু বন্ডের বাজারদর সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় বন্ডে প্রকৃত বিনিয়োগ আনা সম্ভব হচ্ছে না। এখন পুঁজিবাজারের করপোরেট বা বেসরকারি খাতের বন্ডের বেচাকেনাতেও যথেষ্ট উন্নতি হবে। এতে পুঁজিবাজারের অর্থপ্রবাহ বাড়বে।

সিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম ফারুক বলেন, দেশের জিডিপিতে বন্ডের ভূমিকা শূন্য দশমিক শূন্য সাত শতাংশ। আর পুঁজিবাজারের লেনদেন শুরু হলে এ বন্ডের ভূমিকা কয়েক গুণ বাড়বে, পাশাপাশি পুঁিজবাজারের তারল্য সংকট থাকবে না। এছাড়া ইকুইটি-নির্ভর বাজার বৈচিত্র্যময় ও গভীর হবে।  

প্রসঙ্গত, ‘এ’ ক্যাটেগরিতে সিএসই’র ডেট বোর্ডের অনুমতি সাপেক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের চারটি ট্রেজারি বন্ড পরীক্ষমূলকভাবে লেনদেন হয়েছে। ট্রেজারি বন্ডগুলোর নাম হলো‘০২ বিজিটিবি ০৮০৭২০২২’, ‘১০ বিজিটিবি ২০০১২০২৬’, ‘১০ বিজিটিবি ২০০৭২০২৬’ ও ‘১০ বিজিটিবি ১৫০২২০২২’। এসব ট্রেজারি বন্ডে শূন্য থেকে দুই বছর, দুই বছরের ঊর্ধ্ব থেকে পাঁচ বছর, পাঁচ বছরের ঊর্ধ্ব থেকে আট বছর, আট বছরের ঊর্ধ্ব থেকে ১০ বছর, ১০ বছরের ঊর্ধ্ব থেকে ১৫ বছর এবং ১৫ বছরের ঊর্ধ্ব থেকে ২০ বছর মেয়াদি, আর মেয়াদান্তে নির্ধারিত মুনাফা পাবেন বিনিয়োগকারীরা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০