পুঁজিবাজারে নেতৃত্ব দিচ্ছে ব্যাংকের শেয়ার

 

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের শেয়ারের চাহিদা বেড়েছে। সম্প্রতি বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে এ খাতের কোম্পানি। বর্তমানে বাজার মূলধনের ২০ দশমিক ৩৫ শতাংশ রয়েছে এ খাতের দখলে। একইভাবে মোট লেনদেনে ৪১ শতাংশ অবদান রয়েছে এ খাতের। শেয়ারের মূল্য-আয় অনুপাত বা পিই রেশিও রয়েছে সুবিধাজনক স্থানে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, বাজার মূলধনে ব্যাংকের পরের অবস্থানে রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাত। এ খাতের অবদান ১৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। পরের অবস্থানে রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। মোট বাজার মূলধনে এ খাতের অবদান রয়েছে ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। পরের অবস্থানে থাকা টেক্সটাইল খাতের অবদান রয়েছে ১০ শতাংশ।

এদিকে প্রতিবেদনে লেনদেনে শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাত। লেনদেনে এ খাতের অবদান রয়েছে ১১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে থাকা প্রকৌশল খাতের অবদান ৯ শতাংশ। এর পরের অবস্থানগুলোয় রয়েছে টেক্সটাইল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ও সিরামিক খাত।

এ প্রসঙ্গে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা সব সময় ভালো শেয়ারের সঙ্গে থাকতে চান। সার্বিক বিবেচনায় এখনও অধিকাংশ ব্যাংক শেয়ারে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। হয়তো সে কারণেই ব্যাংকের শেয়ারের চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম শেয়ার বিজকে বলেন, ‘আমি পূর্বেও বলেছি, ব্যাংক খাতের কিছু সমস্যা ছিল। তবে এখন সে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। আশা করছি বিনিয়োগকারীদের এখন এ শেয়ারের প্রতি আগ্রহ বাড়বে। তবে এক্ষেত্রে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের। তারা যদি এসব শেয়ারের দিকে নজর দেন তবেই খাতটি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ইতোমধ্যে বাজারে কিছু কিছু শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়ে পড়েছে। কিন্তু কোনো ব্যাংকের শেয়ার এখনও অতিমূল্যায়িত হয়নি। তাছাড়া এ খাতের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর এখনও অনেক কম রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘ সময় নিয়ে বিনিয়োগ করলে এখান থেকে ভালো রিটার্নের প্রত্যাশা করতেই পারেন।’

এদিকে ব্যাংকের পিই রেশিও এখনও ১৫-এর নিচে অবস্থান করছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, যেকোনো খাত বা কোম্পানির ক্ষেত্রে এ রেশিও বিনিয়োগের উপযোগী। কোনো প্রতিষ্ঠানের পিই ২০-এর ওপরে চলে গেলে ধীরে ধীরে ওই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। আর ৪০-এর বেশি পিই হলে ওই প্রতিষ্ঠানকে খুব বেশি  ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। সে কারণে এ ধরনের কোম্পানির মার্জিন ঋণ সুবিধা বন্ধ থাকে।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের পর তালিকাভুক্ত সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর তলানিতে চলে আসে। পরবর্তী সময়ে হল-মার্ক, বেসিক ব্যাংকসহ এ খাতে নানা অনিয়মের কারণে এ খাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। ব্যাংক খাত ছেড়ে বিনিয়োগকারীরা অন্য খাতের দিকে ঝুঁকে পড়েন। যে কারণে লেনদেন এবং বাজার মূলধনে খাতটির অবদান কমে যায়। দীর্ঘদিন পর সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসেছে খাতটি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০