রুবাইয়াত রিক্তা: পুঁজিবাজারে পতন চলছে তো চলছেই। নতুন বছরে বাজার ভালো হবে, এমনটাই প্রত্যাশা ছিল বাজারসংশ্লিষ্ট সবার। আর সামনে নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় সবাই ধরে নিয়েছিল সরকার পুঁজিবাজারকে ভালো করার ওপর জোর দেবে। কিন্তু সব আশায় গুড়ে বালি; বরং সরকারের নানা সিদ্ধান্তের কারণে নতুন বছরে ক্রমেই নিচে নেমে যাচ্ছে বাজার। যেমন ডিএসইর কৌশলগত অংশীদার নির্বাচনের বিষয়টি নিয়ে নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে। এছাড়া তারল্য সংকটের বিষয়টি নিয়েও ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। একবার শোনা যাচ্ছে, লেনদেনের এই নিম্নমুখিতার কারণ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নগদ অর্থের সংকট। আবার বাজারসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নেতারা কয়েকদিন আগে জানান, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে বিনিয়োগের মতো যথেষ্ট অর্থ আছে। অথচ তারা কেন বিনিয়োগ করছে না, তার কোনো যুক্তিসংগত কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে অস্পষ্টতার কারণে পুঁজিবাজারের পতন কোথায় গিয়ে ঠেকবে কেউ বলতে পারছে না। আগের দিন ৫১২ কোটি টাকার লেনদেন বিনিয়োগকারীদের আশান্বিত করলেও পরে জানা যায়, ব্লক মার্কেটে সামিট পাওয়ারের প্রায় ২৬০ কোটি টাকার লেনদেন হয়, যার কারণে লেনদেনের অঙ্ক ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে গত সোমবার ডিএসইর সাধারণ মার্কেটে লেনদেন হয়েছিল আড়াইশ কোটি টাকার কাছাকাছি। গতকাল তা আরও কমে হয়েছে ২৪১ কোটি টাকা।
গত কয়েকদিনের মন্দা বাজারে তুলনামূলকভাবে ভালো লেনদেন হয়েছে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে। মোট লেনদেনের ১১ শতাংশ হয় এ খাতে। ডিএসইর টপ টেন গেইনার তালিকায় ৯টি ছিল মিউচুয়াল ফান্ড। এসব ফান্ডের দর চার থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এর মধ্যে তিনটি ফান্ডের ইউনিটের বিক্রেতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া সর্বোচ্চ শেয়ার লেনদেনকারী শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে সাতটি ছিল মিউচুয়াল ফান্ড। গতকাল সর্বাধিক ১৭ শতাংশ লেনদেন হয় ওষুধ ও রসায়ন খাতে। এ খাতের সালভো কেমিক্যাল, ওয়াটা কেমিক্যাল, স্কয়ার ফার্মা ও এসিআই লেনদেনের শীর্ষ দশে উঠে আসে। ব্যাংক খাতে লেনদেন হয় ১৪ শতাংশ। এ খাতে মাত্র ২৬ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে। ব্র্যাক ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক লেনদেনের শীর্ষ দশে উঠে আসে। প্রকৌশল খাতে লেনদেন হয় ১২ শতাংশ। এ খাতে মাত্র ২৫ শতাংশ শেয়ারদর ইতিবাচক ছিল। বস্ত্র খাতে ১২ শতাংশ লেনদেন হয়। এ খাতের কুইন সাউথ লেনদেনের শীর্ষ দুইয়ে অবস্থান করে। এছাড়া ডরিন পাওয়ার, মুন্নু সিরামিক ও লংকাবাংলা ফিন্যান্স লেনদেনের শীর্ষ দশে অবস্থান করে। গতকাল জেড ক্যাটেগরির দুলামিয়া কটনের দর প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে এবং একপর্যায়ে শেয়ারটির বিক্রেতা পাওয়া যায়নি।