নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে পতন অব্যাহত রয়েছে। সেই সঙ্গে লেনদেনের গতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই দাম কমার তালিকায় নাম লেখাচ্ছে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে মূল্যসূচকও কমছে। এজন্য দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দায়ী করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের মতো চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। গতকাল রোববার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে, দাম কমেছে তার দ্বিগুণের বেশি। ফলে সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা চার কার্যদিবস বাজারটিতে দরপতন হলো।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার প্রায় তিনগুণ। ফলে এ বাজারটিতেও সব মূল্যসূচকে বড় পতন হয়েছে। সূচকের বড় পতনের পাশাপাশি দুই বাজারে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।
এদিন পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকায় লেনদেনের ২৪ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের প্রথম এক ঘণ্টা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। কিন্তু প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর কমতে থাকে। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দরপতনের মাত্রাও বাড়তে থাকে। ফলে এক দিনে দাম কমার তালিকায় বড় হয়, অন্যদিকে সূচকের পতনের মাত্রাও বড় হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ৪৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১০টির এবং ১৪৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিনে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৪ পয়েন্ট কমে ছয় হাজার ২৫৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দুই পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় চার পয়েন্ট কমে দুই হাজার ১২৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪১৯ কোটি চার লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪৬৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৫০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
এদিন সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৫ কোটি ৬৭ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইয়াকিন পলিমারের ১৫ কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এমারেল্ড অয়েল।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑএপেক্স ফুটওয়্যার, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপয়ার্ড, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, দেশবন্ধু পলিমার, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস এবং জেমিনি সি ফুড।
অপর সিএসই’র সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৪২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হওয়া ১৬৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৪টির দাম বেড়েছে। দাম কমেছে ৬৮টির এবং ৭২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।