দেশের পুঁজিবাজারে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চীন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এতে দেশের স্টক এক্সচেঞ্জ একটি নতুন পর্যায় উন্নীত হতে যাচ্ছে। তাদের উন্নত প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধাগুলো ব্যবহার করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। যেহেতু তারা বিনিয়োগ করেছে এবং কৌশলগত অংশীদার হিসেবে এসেছে, তাই তারা নিজেদের স্বার্থেই আমাদের পুঁজিবাজারকে একটি উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। তবে তাদের মাধ্যমে যে ফান্ডটি বাজারে এসেছে সেটি যদি করমুক্ত করা হয় তাহলে শর্ত দিতে হবে এই অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার। তা না হলে কেউই এই ফান্ডটি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করবে না। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। খুজিস্তা নূর-ই-নাহারীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন অর্থনীতিবিদ ড. আহমদ আল কবীর এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এ হাফিজ। অনুষ্ঠানটি গ্রন্থনা ও সম্পাদনা করেন হাসিব হাসান।
আহমদ আল কবীর বলেন, কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চীনের সঙ্গে চুক্তির অর্থ ইতোমধ্যে ডিএসইর অ্যাকাউন্টে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল সোনারগাঁও হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আর এটি দেশের পুঁজিবাজারের জন্য অবশ্যই একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা, যার মাধ্যমে দেশের স্টক এক্সচেঞ্জ একটি নতুন পর্যায়ে উন্নীত হতে যাচ্ছে। আর এর মাধ্যমে তাদের উন্নত প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধাগুলো ব্যবহার করার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে আমাদের। যেহেতু তারা বিনিয়োগ করেছে এবং কৌশলগত অংশীদার হিসেবে এসেছে, তাই তারা নিজেদের স্বার্থেই আমাদের পুঁজিবাজারকে একটি উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যা করার তা করবে। এতে দেশের পুঁজিবাজারের স্বচ্ছতা একটু বাড়বে বলেই মনে করি। তাছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের পুঁজিবাজারের অবস্থান আরেকটু উন্নত হলো। তবে তাদের মাধ্যমে যে ফান্ডটি বাজারে এসেছে সেটি যদি করমুক্ত করা হয় তাহলে শর্ত দিতে হবে যাতে এই অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হয়। তা না হলে কেউই এই ফান্ডটি বাজারে বিনিয়োগ করবে না।
মোহাম্মদ এ হাফিজ বলেন, পুঁজিবাজারের জন্য গতকাল একটি ঐতিহাসিক দিন ছিল। কারণ গতকাল ডিএসইর অ্যাকাউন্টে প্রায় সাড়ে ৯০০ কোটি টাকার মতো হস্তান্তর করা হয়েছে, বিগত ৫০ বছরে যা হয়নি। এতে ডিমিউচুয়ালাইজেশন করার জন্য শেষ দুটি ধাপের একটি সম্পন্ন হয়েছে। বাকি আর একটি ধাপ রয়েছে। আর সেটি হচ্ছে, বাকি ৩৫ শতাংশ শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে বাজারে ছাড়া। যদিও পুঁজিবাজারের এমন সম্ভবনাময় সংবাদ থাকা সত্ত্বেও বাজারের সেরকম কোনো গতিবিধি দেখতে পাচ্ছি না। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হয়তো বাজারের এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ প্রতিষ্ঠানিক বা ব্যক্তিবিনিয়োগকারী যে কেউই চায় নিরাপদ বিনিয়োগ করতে। সামনে জাতীয় নির্বাচনে দেশের কী অবস্থা হয়, সেই চিন্তায় সবাই ‘ওয়েট অ্যান্ড সি’ পদ্ধতি অনুসরণ করছে হয়তো। তাছাড়া চীনের এই ৯৪৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ ছাড়াও তারা কারিগরি ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও বিনিয়োগ করবে। এ কারণে বাজারের গভীরতা অনেক বাড়বে বলেই মনে করি। পাশাপাশি দেশের পুঁজিবাজারের প্রতি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও বাড়বে এবং তারা বিনিয়োগে উৎসাহী হবে। ফলে বাজারের গভীরতা আরও বাড়বে।
শ্রুতিলিখন: রাহাতুল ইসলাম