নিজস্ব প্রতিবেদক : তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সিকিউরিটিজ আইনের বিভিন্ন কমপ্লায়েন্সের স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সমন্বিত অনলাইন ডেটা সংগ্রহ, যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত জমা, মূল্যসংবেদনশীল তথ্য ও আর্থিক হিসাব সরাসরি প্রদানের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), যা বিভিন্ন কোম্পানি সিকিউরিটিজ নিয়ম মেনে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রকাশ করতে পারবে এবং বিভিন্ন কমপ্লায়েন্সের মাধ্যমে পরিপালিত হবে।
গতকাল সোমবার ডিএসই ভবনে এক অনুষ্ঠানে তা উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএপিএলসির প্রেসিডেন্ট রূপালী হক চৌধুরী এবং ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান সিপিএ এবং প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা খাইরুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ।
স্বাগত বক্তব্যে ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য পূরণের অংশ হিসেবে স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম চালু হওয়ায় পুঁজিবাজার আরেক ধাপ এগিয়ে গেল। স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেমের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো এখন থেকে সহজে নির্ভুল তথ্য প্রকাশ করতে পারবে। আগে যে ইচ্ছা ও অনিচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য প্রদান ও প্রকাশ করার ঝুঁকি ছিল, সেই ঝুঁকি আর থাকবে না এবং কেউ কোনো অনিয়ম করলে তা সহজেই চিহ্নিত করা যাবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বিএপিএলসি’র প্রেসিডেন্ট রূপালি হক চৌধুরী বলেন, অনলাইনে তথ্য জমা দেয়ার সুযোগ তৈরি হওয়ায় এখন থেকে সময় অনেক বেঁচে যাবে। এতে করে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর তথ্য দ্রুততম সময়ে সবার কাছে পৌঁছানো যাবে। তবে সিস্টেমে সমস্যা হলে তা সঙ্গে সঙ্গে সমাধানের ব্যবস্থা থাকতে হবে, যাতে সমস্যা হওয়ার কারণে সিস্টেমের কাজ বন্ধ না হয়ে যায়।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজার উন্নয়নে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর তথ্য কোনোভাবে যাতে ভুল প্রকাশ না হয় এবং বাদ না যায় সে বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। কেউ যেন ভুল ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে বাজার থেকে অনৈতিক মুনাফা করতে না পারে এবং ক্ষতি করতে না পারে, সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। আজকের এই উদ্যোগের জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে অনেক ধন্যবাদ। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় শুরু হয়েছে।
অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসই’র সহকারী মহাব্যবস্থাপক ও লিস্টিং অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের প্রধান মো. রবিউল ইসলাম। মূল প্রবন্ধে তিনি তৈরি করা সফটওয়্যারটির উদ্দেশ্য, ব্যবহার ও টেকনিক্যাল ফ্রেমওয়ার্ক এবং বিভিন্ন মডিউল সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
অনুষ্ঠানে ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের চারটি উপাদানের মধ্যে একটি উপদান হলো স্মার্ট ইকোনমি। আর স্মার্ট ইকোনমির দুটি সেক্টর হচ্ছে ক্যাপিটাল মার্কেট ও মানি মার্কেট। আজকের এই বিষয়টি শুধু প্রধানমন্ত্রীর? লক্ষ্য পূরণ নয়, এটি স্মার্ট পুঁজিবাজার তৈরির? অংশ হিসেবে কাজ করবে। অন্যান্য দেশে পুঁজিবাজার অর্থনীতিতে অনেক ভূমিকা রাখলেও বাংলাদেশে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটা হয় না। আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে? পুঁজিবাজারকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, যেটা এখনও হয়ে ওঠেনি। কারণ আমাদের দেশের মেগা প্রকল্পগুলোয় ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থায়ন হচ্ছে। সেটা উন্নত দেশগুলোয় পুঁজিবাজারের মাধ্যমে হয়। এতে পুঁজিবাজার যেমন বড় হয়, তেমনই দেশের উন্নয়নেও অবদান রাখে।