পুঁজিবাজার পতনেও অপ্রতিরোধ্য ব্যাংক খাত

মো. আসাদুজ্জামান নূর: চলতি সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে গতকালও পতন দেখা গেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)। লেনদেন হওয়া সিংহভাগ সিকিউরিটিজের দাম কমতে দেখা গেছে। ফলে আগের দিনের চেয়ে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে শূন্য দশমিক ৬৬ শতাংশ। বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে পুঁজিবাজার উত্থানের পর চলতি সপ্তাহের দুই দিনেই পতন ঘটে। তবে এ পতনের মধ্যেও ধারাবাহিকভাবে লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে ব্যাংক খাত। ডিসেম্বর ক্লোজিং হওয়ায় ব্যাংক খাতের শেয়ার ক্রয়ে ঝুঁকেছেন বিনিয়োগকারীরা।

গতকাল ১৯টির মধ্যে ১২টি খাতের শেয়ারের দরপতন ঘটে। এর বিপরীতে মাত্র সাতটি খাত ছিল গেইনারের তালিকায়। দিনের শুরুতে ক্রেতারা সক্রিয় ছিলেন। কিন্তু শেষ দিকে বিক্রেতারা আধিপত্য বিস্তার করেন। অধিকাংশ খাতে বিনিয়োগকারীদের ‘বিক্রয় চাপ’ বাজারে পতন ঘটায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামীকালও বাজার দৌদুল্যমান থাকতে পারে। কমতে পারে লেনদেন।

আগের কার্যদিবসের চেয়ে গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেন কমেছে। গতকাল লেনদেন হয় এক হাজার ২২৬ কোটি চার লাখ টাকার। আগের দিন রোববার এটি ছিল এক হাজার ৭৮৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা। ধারাবাহিকতা বজায় রেখে লেনদেনে গতকাল সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল ব্যাংক খাতের। ডিসেম্বর ক্লোজিং হওয়ায় মুনাফার আশায় ব্যাংক খাতে বিনিয়োগ সর্বোচ্চ লক্ষ করা যাচ্ছে। ফলে গতকাল ৪৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতে লেনদেন ছিল ৫১৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন বেশি হওয়ায় এ খাতের অবদান ছিল ৬৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ। তবে লেনদেন বেশি হলেও এ খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর হ্রাস পেয়েছে। ৩০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর হ্রাস পাওয়ার বিপরীতে বেড়েছে মাত্র দুটির।

গতকাল দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাত। ১১ দশমিক ৪২ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতে লেনদেন হয় ১৩২ কোটি ২০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে এ খাতের অবদান ছিল ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ। গতকাল এ খাতের সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়তে দেখা গেছে। ২৮টি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২৩টির ও অপরিবর্তিত ছিল দুটির।

এরপর আর কোনো খাতের অবদান ১০ শতাংশ ছাড়ায়নি। ছয় দশমিক ৬৯ শতাংশ অবদান রেখে পরের অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। গতকাল ৭৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা লেনদেন হওয়ার এ খাতের ১০টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে, কমে ১৭টির ও অপরিবর্তিত ছিল ১৭টির। আগের কার্যদিবসে এ খাতের অবদান ছিল আট দশমিক ৮৪ শতাংশ।

চতুর্থ অবস্থানে থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের অবদান ছিল পাঁচ দশমিক ৪১ শতাংশ। ১৩টি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পাওয়ার বিপরীতে বেড়েছে মাত্র চারটির। এর মাধ্যমে গতকাল লেনদেন হয় ৬২ কোটি ৬০ লাখ টাকার। আগের দিন এ খাতের অবদান ছিল আট দশমিক ৩৫ শতাংশ।

পঞ্চম অবস্থানে থাকা খাদ্য খাতসহ পরের অবস্থানে থাকা অন্য কোনো খাতের অবদান পাঁচ শতাংশ ছাড়ায়নি। ৪৬ কোটি ১০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে এ খাতের অবদান দাঁড়ায় তিন দশমিক ৯৮ শতাংশ। এদিন ১৩টি কোম্পানির শেয়ারদর কমার বিপরীতে বেড়েছে মাত্র চারটির। আগের দিন রোববার এ খাতের অবদান ছিল চার দশমিক ১৭ শতাংশ। লেনদেনে এরপর ছিল যথাক্রমে বিমা, প্রকৌশল, ট্যানারি, জীবনবিমা ও অন্যান্য খাত। গতকাল এসব খাতের অবদান তিন শতাংশের ঘরে ছিল।

গতকাল লেনদেন হওয়া ৩৫৯টি সিকিউরিটিজের মধ্যে দর বেড়েছে ১০৪টির, কমেছে ২১৬টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৩৯টির। এর মাধ্যমে গতকাল ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬৩ পয়েন্ট কমে সাত হাজার ২২ পয়েন্টে, শরিয়াহ্ সূচক ডিএসইএস চার পয়েন্ট কমে এক হাজার ৪৭০ পয়েন্টে ও বাছাইকৃত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ব্ল– চিপ সূচক ডিএস৩০ ১৬ পয়েন্ট হ্রাস পেয়ে দুই হাজার ৬৬৬ পয়েন্টে অবস্থান করে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০