নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজার-সম্পর্কিত যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে পরামর্শ করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ দাবি জানিয়েছে শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের সংগঠনটি।
ওই চিঠির অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই), বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘদিনের মন্দাভাব কাটিয়ে পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। বর্তমান কমিশনের সুযোগ্য নেতৃত্ব এবং সব অংশীজনের সহযোগিতার ফলে পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা তৈরি হয়েছে। দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ পুঁজিবাজারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা তাদের হারানো পুঁজি ফিরে পেতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য ছয়টি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। বিদেশি বিনিয়োগকারী আকৃষ্ট করতে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এর আগে বিএসইসির নেতৃত্বে দুবাই,
যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড ও ইংল্যান্ডে রোডশো অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুঁজিবাজারে উপযুক্ত পরিবেশ থাকার কথা উল্লেখ করে রোডশোয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু দুর্বল মনিটরিং পলিসি ও অযাচিত হস্তক্ষেপ বর্তমানে পুঁজিবাজারকে পতনের ধারায় ত্বরান্বিত করছে। যেমন ব্যাংক ও আর্থিক খাতের অবণ্টিত লভ্যাংশের টাকা মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে জমা দিতে বাধা সৃষ্টি করা, বিএসইসিকে না জানিয়ে সংশ্লিষ্ট যেকোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে সরাসরি কোনো তথ্য বা উপাত্ত চাওয়া, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ নিয়ে একের পর এক সমালোচিত সিদ্ধান্ত নেয়া প্রভৃতি। পুঁজিবাজার যখনই একটু গতিশীলতা পায়, তখনই বাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্বল মনিটরিং পলিসি ও নতজানু সিদ্ধান্তের কারণে পুঁজিবাজারের গতিশীলতা হ্রাস পায়। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা চরম ক্ষতিতে পড়ছেন। তাই পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও গতিশীলতার স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজার-বিষয়ক যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ, তথ্য ও উপাত্ত চাওয়া এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ, লভ্যাংশ দেয়া প্রভৃতি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে বিএসইসি বা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে পরামর্শ করার জোর দাবি জানাচ্ছি। এতে পুঁজিবাজার আরও স্থিতিশীল হবে এবং সরকারের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হবে।