পুঁজিবাজার হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জায়গা। অধিকাংশ বিনিয়োগকারী একে ব্যবসা মনে করেন। আসলে পুঁজিবাজার ব্যবসার জায়গা নয়। আজ বিনিয়োগ করবেন কাল বিক্রি করে লাভবান হবেন, প্রতি সপ্তাহে লাভবান হবেন, বিষয়টি এ রকম নয়। ব্যবসার চিন্তা করলে হবে না। পুঁজিবাজার হচ্ছে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জায়গা। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহসানুল আলম পারভেজ এবং এবিবি’র সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নুরুল আমীন।
অধ্যাপক আহসানুল আলম পারভেজ বলেন, দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য পুঁজিবাজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অর্থনীতির উন্নয়নে এটি আশার জায়গা। কিন্তু এখন এটি নিরাশার জায়গায় পরিণত হয়েছে। পুঁজিবাজার এখন আর বাজার নেই। বাজারে তারল্য সংকটসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে। তবে এখন বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে আস্থার সংকট। বাজার ভালো করতে হলে দেশীয় ও বহুজাতিক কোম্পানি আনতে হবে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বিশেষ করে আইসিবি, ব্যাংক, বিমা এবং মিউচুয়াল ফান্ড প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। বিনিয়োগকারীদের বোকা ভাবলে চলবে না। তারা আগের চেয়ে এখন বাজার সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখে। বাজারে এখনও কারসাজি চলছে। জেড ক্যাটেগরির শেয়ারদর প্রায়ই বেড়ে যাচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা এটা বুঝেন।
মোহাম্মদ নুরুল আমীন বলেন, তারল্য সংকট, আস্থার অভাব এবং সুশাসনসহ আরও অনেক সমস্যা বিরাজ করছে। তবে এখানে বড় সমস্যা আস্থার সংকট। বাজার খারাপ অবস্থায় যখন ভালো একটি কোম্পানি আসে তখন বিনিয়োগকারীরা ওই কোম্পানির শেয়ার কেনার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন। আবার গ্রামীণফোনের সঙ্গে সরকারের একটি টানাপড়েন চলছিল। তখন বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে। কিন্তু যখন সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতায় আসে তখন ওই কোম্পানির শেয়ারে ইতিবাচক গতি দেখা দেয়। ২৮০ টাকা থেকে এখন ৩৬০ টাকা হয়েছে। পুঁজিবাজার হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জায়গা। অধিকাংশ বিনিয়োগকারী একে ব্যবসা মনে করে। আসলে পুঁজিবাজার ব্যবসার জায়গা নয়। আজ বিনিয়োগ করবেন কাল বিক্রি করে লাভবান হবেন, প্রতি সপ্তাহে লাভবান হবেন। বিষয়টি এ রকম নয়। ব্যবসার চিন্তা করলে হবে না। পুঁজিবাজার স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জায়গা। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি। কারণ তাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অর্থ দিয়েই বাজার মূলধন সৃষ্টি হচ্ছে। তাই তাদের সচেতন হতে হবে। কিন্তু যারা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী রয়েছেন তারাই এখন ট্রেডারের ভূমিকায় রয়েছেন। যখন বাজার খারাপ অবস্থানে থাকে, তখন স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ভূমিকা থাকার কথা। কিন্তু তাদের সে ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় না। আবার আস্থার অভাবে গত দুই মাসে বিদেশি বিনিয়োগকারী কমে গেছে।
শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ