পুঁজিবাজার স্থিতিশীল অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী করতে হবে। বুঝে শুনে পুঁজিবাজারে আসতে হবে। কারও কথায় প্ররোচিত হয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা ঠিক হবে না। পুঁজিবাজার স্থিতিশীল অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

রোববার গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক কর্মশালায় এমন অভিমত ব্যক্ত করেন বক্তারা। এ কর্মশালার আয়োজন করে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। পাবলিক এবং প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক একাডেমিক শিক্ষা সচেতনতামূলক ধারাবাহিক কর্মশালার অংশ হিসেবে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এ কিউএম মাহবুব। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএসইসির কমিশনার মো. আব্দুল হালিম এবং ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু।

এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এবং ব্যাংকিং ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান তš§য় বর্মণ, ফ্যাকালটি অব বিজনেস স্ট্যাডিজের ডিন ড. ইশিতা রায় এবং ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান, বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিএসই’র বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটা বিএসইসি, ডিএসই এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনসের (আইওএসকো) কার্যক্রমের একটি অংশ। এতে করে আর্থিক বিনিয়োগের পরিবেশ ও সময় ইত্যাদি বিষয়ে জানা যায়। তাই আইওএসকোর সদস্য হিসেবে আমরা সারাদেশে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছি। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ দেশব্যাপী বিনিয়োগকারীদের সচেতন করার জন্য এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। যাতে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে ঝুঁকি এড়িয়ে জেনে বুঝে বিনিয়োগ করে।

বিএসইসি’র কমিশনার মো. আব্দুল হালিম বলেন, একজন মানুষ যা আয় করে, তা থেকে সব খরচের পরে যে বাড়তি অর্থ থাকে সেটাই বিনিয়োগ করে। এই বিনিয়োগের ফলে জিডিপির যে প্রবৃদ্ধি তাতে আমরা কত শতাংশ সেভিংস করতে পারি তাতে অবদান রাখে। আগে আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন সেটা ছিল ১৩ থেকে ১৪ শতাংশ। আর আজকে সেটা ৩০ শতাংশ ছাড়িয়েছে।

তিনি বলেন, অনেক সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ না করার কারণে আর্থিকভাবে প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হন। এর কারণ হচ্ছে তারা বিনিয়োগের ঝুঁকি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানেন না। আমাদের দেশে একজন মানুষ বিনিয়োগ করে কত আয় আর লোকসান করল সেটা সে বুঝতে পারে না। দেখা যায়, তার আয়ের থেকে লোকসান বেশি হয়। এর কারণ হচ্ছে তার বিনিয়োগের সঠিক জ্ঞান নেই। তাই আমরা শুধু এখানে না, সারাদেশের সব জায়গায় এ প্রোগ্রাম আয়োজন করি।

ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেন, একটি গতিশীল পুঁজিবাজারের জন্য দরকার উন্নত তথ্যপ্রযুক্তি, মানসম্পন্ন পণ্য, সুশাসন, দক্ষ জনশক্তি এবং শিক্ষিত ও সচেতন বিনিয়োগকারী। ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিনিয়োগের মাধ্যমেই উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ইক্যুইটির পাশাপাশি নতুন পণ্য-ভিত্তিক বৈচিত্র্যময় বাজারব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের বিনিয়োগকারীদেরও বিনিয়োগ জ্ঞান বাড়াতে হবে এবং সচেতন হতে হবে।

অধ্যাপক ড. একিউ এম মাহবুব বলেন, পুঁজিবাজার স্থিতিশীল অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজকে এ লিটারেসি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস রুমের বাইরেও অনেক কিছু শিখতে পারবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা অনেক মজবুত। একটি দেশের পুঁজিবাজার যতটা উন্নত, সে দেশের অর্থনীতি ততটা ভালো। একটি ভালো পুঁজিবাজার ছাড়া ২০৪১ সালের উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

তš§য় বর্মণ বলেন, যদি আমাদের পুঁজিবাজারের দিকে লক্ষ্য করেন, তবে দেখবেন যে আমাদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ রিউমার বা গুজবকেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। যেখানে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন মার্জিন ঋণ নিয়ে থাকা বিনিয়োগকারীরা। কারণ তাদের মধ্যে ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসির জ্ঞান খুবই কম, যে কারণে আমরা ১৯৯৬ ও ২০১০-এর মতো দুটি ঘটনা দেখেছি। ঘটনাগুলো হয়েছে শুধু ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি সম্পর্কে না জানার কারণে। যে কারণে ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০