Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 10:26 pm

পুঞ্জীভূত লোকসানেও এক বছরে শেয়ারদর দ্বিগুণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঞ্জীভূত লোকসানে থাকলেও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মাইডাস ফাইন্যান্সের শেয়ারদর বাড়ছে। গত এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এদিকে লোকসানের কারণে দীর্ঘদিন ধরে লভ্যাংশপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন মাইডাসের বিনিয়োগকারীরা।

তথ্যমতে, মাইডাস ফাইন্যান্সের শেয়ারদর গত এক মাসে অধিকাংশ কার্যদিবসে বেড়েছে। গেল সপ্তাহের প্রথম দিকে দরপতন হলেও শেষ দিকে তা আবারও উত্থান ধারায় ফিরেছে। গত তিন কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর টানা বাড়ছে। গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ারদর বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ারদর গত এক মাস আগে ৩০ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। গতকাল সোমবার কোম্পানির শেয়ারদর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ টাকা ৬০ পয়সা। কোম্পানির শেয়ার এক বছর আগে ১৮ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে এবং গত সপ্তাহে কোম্পানির শেয়ার সর্বোচ্চ ৩৯ টাকা ৩০ পয়সা বেচাকেনা হয়েছে। অর্থাৎ এক বছরে কোম্পানির শেয়ারদর ২১ টাকা ১০ পয়সা বেড়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাইডাস ফাইন্যান্সের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, কোম্পানিটি দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে রয়েছে। কোম্পানির অন্তর্দ্ব›দ্ব এবং অতীতের দেওয়া ঋণ আদায় করতে না পারা এবং ফান্ডের অভাবে নতুনভাবে বিনিয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে কোম্পানিটি মুনাফায় ফিরতে পারছে না। এ কারণে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের দীর্ঘদিন ধরে লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হয়েছে পর্ষদ।

কোম্পানির সর্বশেষ প্রকাশিত দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর এপ্রিল থেকে জুন তিন মাসে কোম্পানির কর-পরবর্তী মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চার কোটি টাকা এবং শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩৩ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে কোম্পানির কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছিল ৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এবং ইপিএস দাঁড়িয়েছিল ৮১ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানির মুনাফা কমেছে পাঁচ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এবং ইপিএস কমেছে ৪৮ পয়সা। এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দেওয়া তথ্য অনুসারে, কোম্পানিটির পুঞ্জীভ‚ত লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চার কোটি ৮৬ লাখ টাকা।

এর আগে প্রথম প্রান্তিকের প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর কোম্পানিটির নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে আপত্তি তুলেছিল। ওই সময় কোম্পানির শেয়ারদরে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও পরবর্তী সময়ে উত্থানধারা অব্যাহত থাকে।

কোম্পানিটির লভ্যাংশের ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সর্বশেষ ২০১১ সালে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। এরপর থেকে প্রায় ছয় বছর ধরে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত।

পুঁজিবাজারে ২০০২ সালে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১২০ কোটি ২৬ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারসংখ্যা ১২ কোটি দুই লাখ ৬৮ হাজার ৬৭৬টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৪০ দশমিক ২৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৯ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ৩০ দশমিক ৩৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।